ছবি: সংগৃহীত।
ঈদুল আজহার কোরবানিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন পশুর হাটে এখন গরুর আনাগোনা তুঙ্গে। তবে পশু কেনার সময় ক্রেতাদের অন্যতম চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে—গরুটি কি প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা, না কি কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা হয়েছে? কারণ কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্ক করছেন প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা।
বাজারে চাহিদা বাড়িয়ে দ্রুত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে অনেক অসাধু খামারি ও ব্যবসায়ী গরুকে স্টেরয়েড, ডেক্সামেথাসন, হরমোন ইনজেকশন এবং ইউরিয়া জাতীয় রাসায়নিক খাওয়ান। এগুলো দিয়ে গরুর ওজন অল্প সময়ে অনেক বেশি বাড়িয়ে তোলা হয়। কিন্তু এর প্রভাব পড়ে মানুষের শরীরেও। এসব রাসায়নিকযুক্ত মাংস খেলে কিডনি, লিভার, হরমোন ব্যালান্স ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কিছু লক্ষণের মাধ্যমে কৃত্রিম মোটাতাজা করা গরু সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব। যেমন:
অস্বাভাবিক মোটা ও চকচকে শরীর: স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ফোলা বা পিচ্ছিল ত্বক দেখা যায়।
অল্প হাঁটতেই হাঁপিয়ে ওঠে: দম কম থাকে, সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
চোখ লালচে বা অস্বাভাবিক ঝলমলে: স্টেরয়েডের প্রভাবে চোখে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।
গায়ে পানি জমে থাকা বা স্পঞ্জি অনুভূতি: চাপ দিলে গায়ের অংশ দেবে যায়, আবার কিছু সময় পরে উঠে আসে।
অতিরিক্ত লোমহীন বা অস্বাভাবিক লোম দেখা যায়: শরীরে চুলকানি কিংবা চামড়া উঠে যাওয়া দেখা যায়।
মল ত্যাগে অস্বাভাবিকতা: অনেক সময় পাতলা পায়খানা বা অস্বাভাবিক দুর্গন্ধযুক্ত মল হয়ে থাকে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী, হাটে গরু কেনার সময় সন্দেহজনক লক্ষণ থাকলে পাশে থাকা ভেটেরিনারি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। এছাড়া কোনো গরু সন্দেহজনক মনে হলে সেই গরুর মালিক বা বিক্রেতার পরিচয় ও তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এমন কোনো অনৈতিক পদ্ধতির তথ্য জানা থাকলে দ্রুত স্থানীয় প্রশাসন বা প্রাণিসম্পদ অফিসে জানাতে হবে।
গরু মোটাতাজা করার জন্য রাসায়নিক প্রয়োগ যেমন পশুর জন্য অমানবিক, তেমনি মানুষের জন্য বিপজ্জনক। তাই স্বাস্থ্যকর কোরবানির জন্য সচেতন ক্রেতা হিসেবে পশু কেনার আগে এসব লক্ষণ খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন:
