মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে কনসালট্যান্ট সেজে শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তরিকুল ইসলাম।
তার দাবি, ‘আমি সরকারি কর্মকর্তা। আমাকে যেখানে যে দায়িত্ব দেয়া হবে, আমি তা পালন করতে বাধ্য।’
শিশুরোগের মতো স্পর্শকাতর বিভাগে একজন টেকনোলজিস্ট দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালানোয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শারমিন শায়লা।
হাসপাতাল সূত্র ও রোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার ২০১৬ নম্বর কক্ষে শিশু রোগীদের অভিভাবকরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। কক্ষের দরজায় লেখা রয়েছে, কনসালট্যান্ট।
একের পর এক রোগী ঢুকছে এবং চিকিৎসাপত্র হাতে নিয়ে বের হয়ে আসছে। সবাই মনে করছেন, তাদের শিশুকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখছেন। কিন্তু বাস্তবে ওই কক্ষে রোগী দেখছেন হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তরিকুল ইসলাম।
অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সে অনুযায়ী আমি রোগী দেখছি। আমার ডিএমএফ সার্টিফিকেটও রয়েছে।’
তবে তিনি রোগী দেখার সময় ছবি তুলতে নিষেধ করেন।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশুবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. কানিজ নাঈমা বলেন, ‘শিশুবিভাগে রোগীর চাপ খুব বেশি। সব রোগী দেখা সম্ভব হয় না। দুপুর দুইটা বাজলেই আমাকে বের হতে হয়। তখন রোগীরা হয়রানির শিকার হবেন। তাই রোগীদের স্বার্থে তরিকুল ইসলামকে দিয়ে রোগী দেখানো হচ্ছে।’
মেহেরপুর জেলা বিএমএ-এর সভাপতি ডা. আবদুস সালাম বলেন, ‘শিশু চিকিৎসা অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। আমরা এমবিবিএস পাশ করে নানা প্রশিক্ষণ নেয়ার পরও শিশুদের চিকিৎসায় সতর্ক থাকতে হয়। সেখানে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কোনোভাবেই শিশু রোগীর চিকিৎসা দিতে পারেন না।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. এম এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মেহেরপুরে চিকিৎসকের সংখ্যা কম। তরিকুল ইসলামের পোস্ট কিডনি ডায়াগনসিস্টের, এবং এই বিভাগে এখানে কার্যক্রম নেই। পাশাপাশি তার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্স বিষয়ে প্রশিক্ষণ রয়েছে বলে তাকে শিশু বিভাগের আউটডোরে রোগী দেখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:








