রবিবার

২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২ পৌষ, ১৪৩২

শেরপুরে ফটোসেশনেই শেষ বিশ্ব মানসিক দিবস

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৪:০৮

শেয়ার

শেরপুরে ফটোসেশনেই শেষ বিশ্ব মানসিক দিবস
ছবি: বাংলা এডিশন

সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে গেলে সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে পালিত হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। আর শেরপুরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসটি কেবল ফটোসেশন করেই কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়েছে। যা নিয়ে জেলার সচেতন নাগরিকদের মাঝে বইছে সমালোচনার ঝড়।

২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যলয়ে বিশ্ব মানসিক দিবস পালিত হয়। সিভিল সার্জন কার্যলয়ে কেবল ফটোসেশনেই প্রোগ্রামটি পালিত হয়।

প্রতিবেদকের হাতে আসা ছবিতে দেখা যায়, প্রোগ্রামটি বক্তব্য দিচ্ছে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহিন। এ সময় অনেকেই তন্দ্রাঘোরে ঝিমাচ্ছেন, আবার কয়েকজন ঘুমিয়েই পড়েছেন। এভাবে আলোচনা পর্ব শেষ করে অফিস প্রাঙ্গণে ব্যানার হাতে নিয়ে ফটোসেশন করেই প্রোগ্রামটি পালন করা।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সাধারণ নাগরিকদের অবহিত বা সচেতন না করে সিভিল সার্জন কার্যলয়ে থাকা লোকদের নিয়েই ‘গা ছাড়া’ দিবসটি পালন করা হয়েছে। একটি জন গুরুত্বপূর্ণ দিবস, জনসাধারণের মাঝে আলোচনা, সচেতনতা মূলক কোনো বার্তা না দিয়েই এভাবে পালন করা যায়। এভাবে প্রোগ্রামটি পালনের মধ্যদিয়ে সরকারের কর্মঘন্টা, অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান, সচেতন নাগরিকরা।

সুসাইড প্রিভেনশন অ্যান্ড কাউন্সিল সোসাইটির পরিচালক জি এম রব্বানী বলেন, ‘দেশে শারীরিক স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতাও বাড়াতে হবে। কারণ এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, যোগাযোগে বিচ্ছিন্নতা, অতিরিক্ত ডিভাইস ব্যবহার এবং কম ঘুম ছাড়াও সমসাময়িক ঘটনায় শিশু, নবীন-প্রবীণ সবাই জড়িয়ে পড়ছে দুশ্চিন্তার বেড়াজালে। বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ আত্মনির্ভরশীলতার লড়াইয়ে পাল্লা দিতে গিয়ে পড়ছেন নানান মানসিক চাপে। পরিবারের পর্যাপ্ত সহযোগিতা ও বিশ্রামের অভাব, চাকরিজীবী মা হলে না চাওয়া সত্ত্বেও বাচ্চার সাথে দূরত্ব, পারিবারিক দায়িত্ব, কর্মক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশের অভাবে অনেকেই সঠিকভাবে মানসিক দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।

মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাব্যবস্থাই রেহাই দিতে পারে এই পরিস্থিতি থেকে। এ জন্য দরকার কাঠামোগত চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ। সাইকিয়াট্রিক ও সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং সেবার পাশাপাশি একটি অনন্য এবং বাস্তবধর্মী সেবা হচ্ছে অকুপেশনাল থেরাপি। এ একটি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা মূলক বার্তা পৌঁছিয়ে সচেতন করতে পারে। কিন্তু এমন একটি নীরব ঘাতক রোগের ব্যপারে শেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ উদাসীন।

সম্মিলিত সচেতন নাগরিক উদ্যোগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা, সামাজিক অবস্থান, সস্পর্ক ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তবে শেরপুরে মানসিক স্বাস্থ্য আজও অবহেলিত। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতার কারণে এমন অবস্থা। জেলার সিভিল সার্জন তার কার্যলয়েই ফটোসেশান করেই বিশ্ব মানসিক দিবস পালন করে ফেললেন।

এ বিষয়ে জানতে সিভিল সার্জনকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।



banner close
banner close