ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম (সাপের বিষনাশক ভ্যাকসিন) না থাকায় রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তবর্তী কদমতলা গ্রামে বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাকিবুল ইসলাম। পরিবারের সদস্যরা জানায়, তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে ভ্যাকসিন না পেয়ে হরিপুর, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কোথাও এন্টিভেনম না পাওয়ায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাকিবুলের মৃত্যু হয়।
শনিবার বিকেলে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়। ছেলের মৃত্যুতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি পীরগঞ্জের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী, হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ পাঁচজন সাপের কামড়ে মারা গেছেন। স্বজনরা বলছেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এন্টিভেনম না থাকায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন জানান, “সাপ কামড়ানোর পর একে একে তিনটি হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। শেষে ওঝার কাছে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম, তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি।”
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, বর্ষায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রতি বছর ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠানো হলেও বর্ষা শেষ হওয়ার পর সরবরাহ আসে। সময়মতো ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ রাখা জরুরি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তার জানান, তাদের কাছে ৫ ভায়েল এন্টিভেনম আছে, কিন্তু একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে ১০ ভায়েল প্রয়োজন। বিষয়টি সিভিল সার্জন অফিসকে জানানো হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও এন্টিভেনম পাইনি। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারেও সংকট রয়েছে। সরবরাহের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”
আরও পড়ুন:








