রবিবার

২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

জনবল সংকটে পেকুয়া হাসপাতাল: স্বাস্থ্যসেবায় চরম ভোগান্তি

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০ জুলাই, ২০২৫ ১১:১১

শেয়ার

জনবল সংকটে পেকুয়া হাসপাতাল: স্বাস্থ্যসেবায় চরম ভোগান্তি
ছবি সংগৃহীত

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষের সরকারি চিকিৎসাসেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল—পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানটি মারাত্মক জনবল সংকটে ভুগছে, ফলে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি।

১৯৯৮ সালে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম সালাহ উদ্দিন আহমদের উদ্যোগে সৌদি সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। শুরুতে প্রকল্পভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠান পরে ২০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রূপান্তরিত হয়, যা বর্তমানে ৩১ শয্যায় উন্নীত হয়েছে।

দিন দিন বাড়ছে জনসংখ্যা ও রোগীর চাপ। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার রোগী বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবা নিতে আসলেও সীমিত জনবল নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

সরকারি জনবল কাঠামো অনুযায়ী ১০ জন এমবিবিএস চিকিৎসকের অনুমোদন থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন ৯ জন, এর মধ্যে ২ জন কনসালটেন্ট ও ৩ জন মেডিকেল অফিসার। নির্ধারিত সার্জারি ও মেডিসিন কনসালটেন্টের পদ শূন্য রয়েছে। নার্সদের ২৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ২০ জন।

গত মাসে হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগে ২২,৫৪২ জন, জরুরি বিভাগে ৫,৩২৮ জন এবং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ১,৪০১ জন রোগী। এত বিপুলসংখ্যক রোগীর তুলনায় প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩১ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন রোগী আবাসিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকদের ঘাটতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিকেলবেলা স্পেশালিস্ট চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়া হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজি, ব্লাড ব্যাংক ও এক্স-রে সেবা চালু থাকলেও প্রয়োজনীয় ইনস্ট্রুমেন্টের সরবরাহ নেই। চিকিৎসা ছাড়াও রয়েছে নানা অভিযোগ—নার্সদের সেবা না দেওয়া, ফার্মেসিতে অদক্ষ কর্মীদের ওষুধ দেওয়া, সুইপারদের চিকিৎসা কাজে যুক্ত হওয়া এবং অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ব্যবস্থাপনা।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজিবুর রহমান জানান, “ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি সামাল দিতে। ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হলে জনবল সংকট কাটবে বলে আশাবাদী।” তিনি আরও বলেন, “রোগীর চাপের তুলনায় হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা প্রয়োজন, এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।”

জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দ্রুত শূন্যপদ পূরণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।



banner close
banner close