লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী হাতীবান্ধা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও তীব্র জনবল সংকটে ভুগছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ফলে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
২০১১ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৩১ শয্যা থেকে উন্নীত করে ৫০ শয্যায় রূপান্তর করা হলেও, দীর্ঘ এক যুগ পার হলেও বাড়ানো হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। নিয়ম অনুযায়ী এখানে ১৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। একইভাবে ২৫ জন নার্সের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন। বাকি ১১ জনের মধ্যে ৮ জন উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় এবং ১ জন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। এছাড়া ক্লিনারের পাঁচটি পদের সবগুলোই শূন্য রয়েছে।
অপরদিকে, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও অপারেটর না থাকায় সেগুলোর কোনো ব্যবহার নেই। যেমন, রেডিওগ্রাফার না থাকায় এক্স-রে মেশিনটি বছরের পর বছর তালাবদ্ধ পড়ে আছে। একইভাবে আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিন থাকলেও নেই প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। ফলে রোগীদের বাইরের প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে। এ ছাড়া আধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকলেও জনবল সংকটের কারণে তা এখনো চালু হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শরিফুল আমিন বলেন, "আমরা ইতোমধ্যে জনবল চাহিদা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।"
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, "মাত্র তিনজন চিকিৎসক ও ১৩ জন নার্স দিয়ে প্রতিদিন শত শত রোগীকে সেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। অনেক সময় রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না।"
প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা চিকিৎসার আশায় এই কমপ্লেক্সে আসেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে ধারদেনা করে শহরের হাসপাতালে পাড়ি জমাচ্ছেন।
জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এ সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা।
আরও পড়ুন:








