সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি বগুড়ায় চলছে শোক ও দোয়ার আয়োজন। তার প্রয়াণে শুধু বাঘবাড়ি এলাকা নয়, পুরো বগুড়াজুড়েই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্তব্ধ হয়ে আছেন সর্বস্তরের মানুষ।
বগুড়ার পুত্রবধূ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ জনপদের মানুষের সম্পর্ক ছিল একান্তই ঘরোয়া ও আবেগের। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজেদের গর্বের ‘ব্যাটার বউ’কে হারিয়ে পরিবারের সদস্য হারানোর মতোই শোকাহত বগুড়ার সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ ৪৩ বছর দল ও দেশের স্বার্থে আপসহীন নেতৃত্ব দেওয়ার পথে বিগত দেড় দশকে তার ওপর চালানো নিপীড়নের কথা স্মরণ করে অশ্রুসজল হয়ে পড়েন স্থানীয় বিএনপি নেতারাও।
১৯৬০ সালে দিনাজপুরের মেয়ে খালেদা খানম বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামে পুত্রবধূ হয়ে আসেন। সে সময় তার স্বামী জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে ব্যস্ত, তখন খালেদা জিয়া ছিলেন সংসার ও সন্তানদের সামলানো এক নিবেদিত গৃহবধূ।
১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সংকটময় সময়ে বিএনপির হাল ধরেন বেগম খালেদা জিয়া। একদিকে দল সামলে, অন্যদিকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করে তিনি আশি ও নব্বই দশকের সন্ধিক্ষণে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন আস্থাশীল জাতীয় নেত্রী হিসেবে।
১৯৯১ সালে বগুড়া থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশের প্রথম এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। পরবর্তীতে আরও দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বগুড়া থেকে যত নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, প্রতিবারই ‘ব্যাটার বউ’কে বিজয়ী করতে বিপুল ভোট দিয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
এদিকে বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নেতাকর্মীদের জরুরি উপস্থিতির আহ্বান জানানো হয়। সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে, তার নির্বাচনী আসন বগুড়া-৭ এর শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জেলা বিএনপির উদ্যোগে শোক প্রকাশে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদে মসজিদে দোয়া, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনার আয়োজন।
আরও পড়ুন:








