বাগেরহাটের চিতলমারীতে সার ডিলার নিয়োগে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে। গত ৮ ডিসেম্বর দৈনিক বাংলা এডিসনে “সার ডিলার নিয়োগের সুপারিশে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২৭ নভেম্বরের সুপারিশসংক্রান্ত রেজুলেশন বাতিল করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও ১১ ডিসেম্বরের নতুন রেজুলেশনে কারও নাম সুপারিশ করা হয়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয় সাধারণ কৃষকেরা অসভ্য ও অসামাজিক আচরণের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যবসায়ীকে নতুন নীতিমালায় সার ডিলার লাইসেন্স না দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী চিতলমারী সদর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সার ডিলার নিয়োগের জন্য ‘মেসার্স শেখ ব্রাদার্স’ ও ‘মেসার্স হাজরা ট্রেডার্স’ আবেদন করে। অভিযোগ রয়েছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে গত ২৭ নভেম্বর চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্যসচিব মো. সিফাত-আল-মারুফ কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে ‘মেসার্স হাজরা ট্রেডার্স’-কে সুপারিশ করেন।
এ ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে চিতলমারী বাজারের বিএডিসি সার ডিলার ‘মেসার্স শেখ ব্রাদার্স’-এর মালিক মো. ফেরদাউস শেখ জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্যসচিব এবং উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি ৯ ও ১০ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন ২৭ নভেম্বরের সুপারিশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোল্লা সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রভাত হালদারের সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই দিনই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউকে সুপারিশ না করে নতুন রেজুলেশন করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান।
এ বিষয়ে ‘মেসার্স শেখ ব্রাদার্স’-এর মালিক মো. ফেরদাউস শেখ বলেন, “তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে আমার নিজস্ব সার গুদাম রয়েছে এবং ভাড়াকৃত গুদামটি উন্নত ও ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের। এরপরও নতুন রেজুলেশনে আমাকে সুপারিশ করা হয়নি। এটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষপাতিত্বের বহিঃপ্রকাশ।”
এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত-আল-মারুফ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে বাংলা এডিসন।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বাংলা এডিসনকে বলেন, ‘জেলার নির্দেশনায় পুনরায় তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনসহ রেজুলেশন পাঠানো হয়েছে। কাকে ডিলারশিপ দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসন নেবে।’
আরও পড়ুন:








