সোমবার

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

মেহেরপুর গাংনীতে মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু ওষুধ বিক্রি; জরিমানার নামে দায়মুক্তির লাইসেন্স

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৪১

শেয়ার

মেহেরপুর গাংনীতে মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু ওষুধ বিক্রি; জরিমানার নামে দায়মুক্তির লাইসেন্স
ছবি: বাংলা এডিশন

ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে নয়—ব্যবসায়ীকে সংশোধন করাই প্রশাসনের লক্ষ্য। তবে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মতো স্পর্শকাতর পণ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সামগ্রী বিক্রির ঘটনায় শাস্তির মাত্রা নিয়ে জনমতে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন। বিশেষ করে ২০২৪ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু ওষুধসহ বিভিন্ন জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এখনো দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, তারপরেও জেল-দণ্ডের পরিবর্তে জরিমানায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ায় জনস্বার্থে শাস্তির দাবি জোরালো হচ্ছে।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর একটার সময় মেহেরপুরের গাংনী বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান।

অভিযানকালে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রির দায়ে আকমল স্টোরের স্বত্বাধিকারী আকমল হোসেনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনের অভিযোগে আমিন মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী রাশেদুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে এসএস ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযানের সময় প্রাথমিকভাবে জরিমানার অঙ্ক বেশি দেখানো হলেও দরদাম ও তদবিরের পর তা কমিয়ে আনা হয়।

বিশেষ করে যে দোকানে ২০২৪ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল-দণ্ড না দিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নির্ধারণ করে পরে তা কমিয়ে ২৫ হাজারে নামিয়ে আনা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। আরও অভিযোগ রয়েছে, জব্দ করা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ঘটনাস্থলে ধ্বংস করা হয়নি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান বলেন, আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে নয়, ব্যবসায়ীকে সংশোধন করাই ভোক্তা অধিকারের লক্ষ্য। এই ব্যবসায়ীরা তাদের ভুল সংশোধনের সময় চাওয়ায় তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা রিয়াজ মাহমুদ, গাংনী উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান, গাংনী সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সদস্য এবং জেলা পুলিশের সদস্যরা।

তবে এলাকাবাসীর দাবি, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা, জরিমানার পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এবং জব্দকৃত মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য প্রকাশ্যে ধ্বংস নিশ্চিত করতে হবে।



banner close
banner close