মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

চাঁদপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অভিযোগের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৩২

শেয়ার

চাঁদপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অভিযোগের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন
ছবি: বাংলা এডিশন

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী সুলতানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগকে “মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” দাবি করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রথমে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এবং পরে মাদ্রাসা–সংলগ্ন প্রধান সড়কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে অভিযোগের ভিত্তিতে শাহরাস্তি থানা পুলিশ মালেককে আটক করে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর মাদ্রাসা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য: “অভিযোগটি সাজানো”

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, মালেক স্যার নীতিবান, সৎ ও সদাচারসম্পন্ন একজন শিক্ষক। তাদের দাবি—তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগটি সম্পূর্ণ অসত্য ও পরিকল্পিত। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, অভিযোগকারী জাফরিন ও আকলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে পূর্বেও বিভিন্ন অনিয়মের কথা শোনা গেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি পড়াশোনায় দুর্বল ছিলেন এবং বহিরাগত ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরার কারণে আগে থেকেই বিতর্কিত ছিলেন।

এলাকাবাসীর মতামত

মানববন্ধনে থাকা বেশ কিছু এলাকাবাসীও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান। তাদের দাবি, শিক্ষক মালেক একাধিকবার অভিযোগকারীদের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণে সতর্ক করেছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকেই তাকে টার্গেট করে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ আনা হয়ে থাকতে পারে বলে তারা মনে করেন।

এলাকাবাসীরা আরও জানান, মাদ্রাসা সকাল ৮টায় খোলে এবং শিক্ষকরা ৯টার পর আসেন। কিন্তু অভিযোগকারী জাফরিন নাকি সকাল ৭টার দিকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এসে বহিরাগতদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করতেন—এমনও অভিযোগ তাদের পক্ষ থেকে উঠে আসে।

তাদের সন্দেহ, মাদ্রাসার নতুন সরকারি ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজ চক্রের প্রভাব বিস্তার, এবং নবগঠিত ম্যানেজিং কমিটিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা—এসব কারণেই ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাজানো হতে পারে।

শিক্ষক মহলের প্রতিক্রিয়া

মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক খোরশেদ আলম, সরোয়ার ও রফিকুল ইসলাম বলেন, “মালেক স্যার সবসময়ই উচ্চ চরিত্রের মানুষ হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো নেতিবাচক অভিযোগ শোনা যায়নি। তাই আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”

সহকারী সুপার মাওলানা আমিনুল হক আশরাফি জানান, “ঘটনার পর আমরা রবিবার বসে বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই পরিকল্পিতভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। যদি তার বিরুদ্ধে সত্যি কোনো প্রমাণ মেলে, মাদ্রাসার পক্ষ থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত আমরা তার দ্রুত মুক্তি চাই।”

কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে আব্দুল মালেককে মুক্তি না দিলে তারা টানা অনশনসহ কঠোর কর্মসূচিতে নামবেন।



আরও পড়ুন:

banner close
banner close