নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে কুমারপুর ফেরিঘাট সড়কে নারিয়াপারা খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার পিসি গার্ডার সেতুটি ২ বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে।
সেতুর মূল কাঠামোর কাজ সম্পন্ন হলেও এখনো হয়নি সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ রোড) নির্মাণ। ফলে তিন কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হওয়া এই সেতুটি ব্যবহারের কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আশপাশের ১২–১৪টি গ্রামের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষের ইউনিয়ন পরিষদে আসা-যাওয়া, জেলা সদরে চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোর একমাত্র ভরসা এই রাস্তা। সেতুটি চালু না হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। স্কুল–কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী—সবাইকে শহরে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
নেত্রকোনা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জের এমএস মির্জা কনস্ট্রাকশন ও মামুন কনস্ট্রাকশন জেবিকে ২০২১ সালে সেতুটি নির্মাণের কাজ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের আগস্টে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে দুই দফায় সময় বাড়ানো হয়। প্রথমে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর, পরে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। সেতুর কাঠামো শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
এলজিইডির দাবি, প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কোনো বাজেট রাখা হয়নি। ফলে সংযোগ সড়ক নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি না পেয়ে কাজ আটকে আছে।
নেত্রকোনা সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোয়াইব ইমরান বলেন, “ব্রিজ করার পর রাস্তার সাথে মিলাতে হলে দূর থেকে উঁচু করে সংযোগ সড়ক তৈরি করতে হয়। কাজ শুরুর আগে এলাকাবাসী জায়গা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখন দিচ্ছেন না। বলছেন অ্যাকুয়ার করতে হবে। এই কাজে ভূমি অধিগ্রহণের বরাদ্দ না থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, “ব্রিজটি আমাদের উপকার তো করছেই না, বরং কষ্টের কারণ হয়েছে। ব্রিজ না থাকলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া যেত, এখন তাও সম্ভব নয়। তিন বছর ধরে অপেক্ষায় আছি, ব্রিজ হলো কিন্তু আমাদের কোনো কাজে লাগছে না।
অটোরিকশা চালক আব্দুল মালেক বলেন, সরকার এত টাকা খরচ করে ব্রিজ বানাইছে, কিন্তু কোনো কাজই হয় না। আমরা তো রাস্তা দিয়ে যেতে পারি না। কয়েক বছর ধরে ব্রিজের নিচ দিয়ে বাইপাস রাস্তা ব্যবহার করছি। ব্রিজের কাজ আর শেষ হইল না। এখন তো মনে হয় এটার উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের বাজেট প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল না।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জমির মালিকেরা জায়গা দিলে দ্রুতই সেতুটি চালু করতে পারব; না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন:








