টানা দুইদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহে কবলে পুরো পঞ্চগড় জেলা। উত্তর হিমালয় অঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস ও কুয়াশায় বিপর্যস্ত এখানকার জনজীবন। হালকা কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। এ জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
তেঁতুলিয়ায় টানা দুই দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় পুরো পঞ্চগড় জেলাজুড়ে নেমে এসেছে তীব্র শীত। হিমালয়-পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা কনকনে বাতাস আর কুয়াশা স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষ এবং নিম্ন আয়ের পরিবারের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা রোববার সকাল ৯টার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সহকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ দুদিনের মৃদু শৈত্যপ্রবাহে সন্ধ্যা নামলেই শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের হচ্ছেন না। অনেকেই খরকুটো বা অগ্নিকুণ্ড জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি—কনকনে ঠান্ডায় কৃষিকাজও অনেক কমে গেছে।
অবিরাম শীতে বাড়ছে শীতজনিত রোগী। শিশু ও বয়স্করা বিশেষভাবে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এই সময়ে গরম কাপড় ব্যবহার, গরম খাবার খাওয়া এবং পুষ্টিকর শাকসবজি গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রৌশনাবাগ এলাকার রাজমিস্ত্রি আক্তার হোসেন বলেন, “রাত থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা। সকালে কাজ শুরু করতেই হাত জমে যায়। কিন্তু কাজ না করলে তো সংসার চলবে না।”
উপজেলা সদরের ভ্যানচালক জাফর আলী জানান, “সকালে ভ্যান চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। উত্তরের হিমেল হাওয়া সরাসরি গায়ে লাগছে, তাই ভ্যান চালাতে কষ্ট হচ্ছে।”
তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় জানান, সোমবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা হিমেল বাতাসের কারণে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, আগামিদিনে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন:








