মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

বগুড়ায় ভুয়া জামায়াত কর্মী সেজে ভাতার কার্ডের নামে প্রতারণা, আটক এক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:০৯

শেয়ার

বগুড়ায় ভুয়া জামায়াত কর্মী সেজে ভাতার কার্ডের নামে প্রতারণা, আটক এক
ছবি: বাংলা এডিশন

ভুয়া জামায়াত কর্মী সেজে বগুড়ায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে ভাতার কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয় জনতা।

পরে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এ ফোন পেয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হেফাজতে নেয়।

আটক ব্যক্তির নাম মো. মোকছেদ আলী (৪৭)। তিনি বগুড়া সদর থানাধীন ইসলামপুর হারিগাড়ী উত্তরপাড়ার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে মো. মোমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে অভিযুক্ত মোকছেদ আলী ও তার সঙ্গীরা বড় বেলাইল গ্রামের মানুষদের জানায় যে, তারা যদি 'দাঁড়ি পাল্লা' প্রতীকে ভোট দেন, তবে তাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে। আসামির এই কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামের কিছু দরিদ্র মানুষ তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি মোকছেদ আলীর কাছে জমা দেয়।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অভিযুক্ত মোকছেদ আলী পুনরায় ওই গ্রামে যান এবং যাদের এনআইডি কার্ড নেওয়া হয়েছিল, তাদের সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদনের একটি অনলাইন ফরম দেখান। এরপর তিনি কার্ড করে দেওয়ার অনলাইন খরচ বাবদ জনপ্রতি ২৫০ টাকা করে দাবি করেন। বড় বেলাইল হিন্দুপাড়া গ্রামের জনৈক গোপীনাথ, মিলন ও জমনী রানীসহ আরও কয়েকজনের কাছ থেকে তিনি প্রতি কার্ডের জন্য ২৫০ টাকা করে নেওয়া শুরু করলে বিষয়টি গ্রামের মো. মোমিনুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজনের নজরে আসে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোমিনুল ইসলাম সঙ্গীয় শ্রী বিপ্লব কুমার গুপ্ত ও মিলনের সহায়তায় গোপীনাথের বাড়ির সামনের খোলা স্থানে মোকছেদ আলীকে আটক করেন। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাতা কার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এতে এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনসহ সাধারণ মানুষজন উত্তেজিত হয়ে মারমুখী আচরণ করতে শুরু করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মো. মোমিনুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯-এ ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই বগুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ পরিবেশ শান্ত করে অভিযুক্ত মোকছেদ আলীকে হেফাজতে নেয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও মোকছেদ আলী কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাদী মো. মোমিনুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেন, মোকছেদ আলী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাধারণ লোকজনকে প্রলোভন ও ভুল বুঝিয়ে কার্ড করে টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।

বগুড়া জামায়াতের শহর শাখার সেক্রেটারি আসম আব্দুল মালেক বলেন, বগুড়ায় হিন্দু পল্লীতে দাড়ি পাল্লায় ভোটের ওয়াদা এবং বয়স্ক ভাতা’র কার্ড করার নামে চাদাঁবাজির ঘটনার সাথে জড়িত ধৃত মোকছেদ আলী জামায়াতের কোন পর্যায়ের কর্মী নয়। সে একজন প্রতারক ও টাউট প্রকৃতির লোক, জামায়াতের সাথে তার কোন প্রকার দূরতম সম্পর্ক নাই।

এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহফুল আলম বলেন, তারা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মোকছেদ নিজেকে জামাত কর্মী দাবি করলেও এ বিষয়ে তারা দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দদের মাধ্যমে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।



আরও পড়ুন:

banner close
banner close