ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ চন্ডিপুরের গোয়ালঘরে প্রায় এক দশক ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা সাবিয়া খাতুন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভাঙা টিনের ঘর, নেই দরজা–জানালা, নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাত–দিন একই অন্ধাকার, ঘরে ছিল মাত্র একটি ভাঙা চকি বালিশ, চাদর কিংবা ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসও ছিল না। কখনো প্রতিবেশীর দয়ায় কোনোরকমে খাবার পেতেন, আবার কখনো অনাহারেই কেটেছে দিন। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও কষ্টই ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী।
সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবিয়া খাতুনের করুণ দিনযাপনের খবর প্রকাশিত হলে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আর্ন এন্ড লিভ’ ঝিনাইদহ জেলা শাখা।
সংবাদটি দেখেই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন জেসি প্রতিবেদকের সাথে যোগাযোগ করেন । পরে নিজ উদ্যোগে সাবিয়ার ভাঙা ঘর মেরামত সহ দুই মাসের খাবার সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর সাবিয়া হয়ে পড়েন সম্পূর্ণ নিঃস্ব। সন্তান না থাকায় ভাইয়ের ছেলের বাড়িতে নানা অবহেলা, ও কষ্টে কাটছিল তার জীবন। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে কখনো কখনো তাকে সিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
ফরিদা ইয়াসমিন জেসি জানান, সংবাদটি দেখার পরই আমি দ্রুত যোগাযোগ করি। বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে দেখি তিনি সত্যিই চরম অসহায় অবস্থায় আছেন। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তার ঘর মেরামত করেছি এবং দুই মাসের খাবার কিনে দিয়েছি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মানবিক দায়িত্ব। সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা দরিদ্র, প্রতিবন্ধী ও দুঃস্থ মানুষের জন্য কাজ করে আসছি। ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
সহায়তা পাওয়ার পর সাবিয়া খাতুনের জীবনে কিছুটা স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন পর এখন তিনি পাচ্ছেন নিরাপদে থাকার মতো একটি আশ্রয়।
আরও পড়ুন:








