বুধবার

৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

জাজিরা থানার ওসি মাইনুলের বদলী

মুনতাসির তাসরিপ

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:০৬

শেয়ার

জাজিরা থানার ওসি মাইনুলের বদলী
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলা। বরাবরই উপজেলার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ছিলেন সন্ত্রাসীদের পকেটে। পাঁচ আগস্টের পটপরিবর্তনের পরও দাপট দেখিয়েছিল এ এলাকার দোসররা।

পুলিশ কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাইনুল ইসলাম জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ হয়ে এসেই অপরাধী আর আওয়ামিলীগের সেই শক্ত ঘাঁটি দিয়েছেন দুমড়েমুচড়ে। একে একে এক সময়ের প্রভাবশালী সব আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করেন মাইনুল।

আওয়ামী আমলে নির্যাতিত এই ইন্সপেক্টর একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন যাচ্ছেন নিরলসভাবে। অল্পদিনেই অপরাধীদের আতংকে পরিণত হওয়া ওসি মাইনুল ইতিমধ্যেই ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছেন।

গত এক ডিসেম্বর ওসি মোহাম্মাদ মাইনুল ইসলামকে বদলী করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে দায়িত্ব দেয়া হলে এলাকাজুড়ে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আবারো অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিনত হতে পারে জাজিরা, এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে। তবে স্বস্তি প্রকাশ করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্টও করছেন। কারণ, উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সর্বোচ্চ পদধারী সন্ত্রাসীদের আটকের নেপথ্যের নায়ক ওসি মাইনুল।

প্রসঙ্গত, ওসি মাইনুল ইসলাম ২০২৫ সালের চার জুন থেকে এক ডিসেম্বর পর্যন্ত, আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদের ৪৭৫ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করে রেকর্ড গড়েন। এ ছাড়া কিশোর গ্যাং, মাদক, নারি ও শিশু নির্যাতনের মত মামলাগুলোতেও গ্রেপ্তার করেছেন কয়েকশ।

গত ২৪-আগস্ট ঢাকায় পুলিশের বিভাগীয় একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল মল্লিক ঢাকা রেঞ্জের ১৩টি জেলার মোট ৯৮টি থানার দায়িত্বে থাকা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-দের মধ্যে ইন্সপেক্টর মাইনুল ইসলামকে শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ-এর পুরষ্কার তুলে দেন। এ সময় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকা ব্যাক্তি ও তাদের আশ্রয়দাতাদের পর্যন্ত ছাড় দিতেন না ওসি মাইনুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের আতঙ্কের নাম হওয়ায় বদলীর পরও প্রশংসায় ভাসছেন মাইনুল। স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীলরাও তার এহেন কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টি প্রকাশ এবং একই সাথে বদলীর আদেশে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

ওসি মাইনুল ইসলাম জানান, ‘আমি অপরাধীদের শুধুমাত্র অপরাধী হিসেবেই দেখি, তাদের অন্য কোনো পরিচয় বিবেচনা করার সুযোগ আমার কাছে নেই। কাজেই আমাকে কে ভালো বললো আর কে খারাপ বললো তাতে আমার কিছুই যায় বা আসে না, আমি পুলিশে যতদিন দায়িত্বে আছি শুধু অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাবো।



banner close
banner close