সোমবার

১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ঈশ্বরদীতে সংঘর্ষের ঘটনার মামলায় জামিন পেলেন জামায়াত প্রার্থী ও নেতাকর্মী

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৪৪

শেয়ার

ঈশ্বরদীতে সংঘর্ষের ঘটনার মামলায় জামিন পেলেন জামায়াত প্রার্থী ও নেতাকর্মী
বাংলা এডিশন

পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জামিন পেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর এমপি পদপ্রার্থী ও জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল সহ ৩২ নেতাকর্মী।

‎‎সোমবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা আমলী আদালত-২ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট মো: তরিকুল ইসলাম জামিন মঞ্জুর করেন।

‎‎পাবনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের আইনজীবী এডভোকেট সুলতান মাহমুদ খান এহিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে পাল্টাপাল্টি দু'টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় জামায়াতে জেলা আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল সহ ৩২ জনকে আসামী করা হয়। আজকে দুপুরে মামলার সব আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

‎‎জামিন পাওয়ার পর পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমাদের বিজ্ঞ আইনজীবীরা সত্য উদঘাটন করেছে। কোর্টকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্যই একজন এমপি প্রার্থী সহ নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে এ মামলা দায়ের করেছে। অসংখ্য গাড়ী ভাঙ্গা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে। আমাদের অনেক ভাইকে আহত করা হয়েছে। বিবেক প্রতিবন্ধী হিসেবে হাবিব সাহেব আমার নামে পর্যন্ত মামলা দিয়েছে। আমরা কিন্তু তার নামে মামলা দেয়নি। এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহার দাবি করেন তিনি।

‎এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা পাল্টাপাল্টি দুই মামলায় উভয়দলের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

‎শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে জামায়াতের দু’জন এবং বিএনপি’র তিনজন কর্মীকে আটক করা হয়। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

‎‎ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) আব্দুর নূর বলেন, “দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মামলা করেছে। দুই পক্ষের মামলার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী আসামিদের গ্রেপ্তার করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।”

‎এর আগে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে পাল্টাপাল্টি দু'টি মামলা দায়ের করা হয়।

‎‎সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধার ছেলে ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বাঁধন হাসান আলিম বাদি হয়ে ৩২ জন জামায়াত নেতার নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ১৫০ থেকে ২০০ জন অজ্ঞাতনাম ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির এবং পাবনা-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডল কে।

‎অপরদিকে, ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম বাদি হয়ে একই থানায় ৩৮ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অপর মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে। এছাড়া ১০০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই পাবনা-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের আত্মীয় এবং অনুসারী।

‎পুলিশ ও স্থানীয়দের মতে, গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার চর গড়গড়ি গ্রামে জামায়াত প্রার্থীর একটি নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপি'র মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

‎সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী সমর্থক আহত হন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপির-জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন। গতকাল ছিনতাই হওয়া জামায়াতের ৯ মোটরসাইকেল কৃষকদল নেতা মক্কেল মৃধার বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে পুলিশ।



banner close
banner close