বান্দরবান মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের (মাতৃমঙ্গল) একটি পরিত্যক্ত গুদামে কয়েক লক্ষ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। তবে ঠিকমত রোগিদের প্রয়োজন মাফিক ওষুধ বিতরন না করার কারণে এমনটি ঘটছে বলে জানালেন অফিসের কয়েকজন কর্মচারী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মাতৃমঙ্গলের গাড়ির গ্যারেজের একটি পরিত্যক্ত সিড়িঘরের অব্যবহৃত গুদামে লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি সরবরাহকৃত ওষুধ ফেলে রাখা আছে। এরমধ্যে নামিদামী ব্রান্ডের এডি সিরিঞ্জ, ইসিপি ২ট্যাব, ওরাল পিল সুখি, এমক্সিলিং, টাইসিল, প্যারাসিটামলসহ সব দামি ওষুধ।
এসব ওষুধগুলোর বেশিরভাগই সরকারি বরাদ্দের মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচির জন্য দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। তবে সময়মতো সেগুলো রোগীদের মাঝে বিতরণ না করে দীর্ঘদিন রেখে দেবার কারণে মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার চরম অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার নিদর্শন। তাদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সরকারি টাকায় কেনা মূল্যবান ওষুধ নষ্ট হয়েছে, যা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাওয়া দরিদ্র রোগীদের জন্য ছিল।
এদিকে মাতৃমঙ্গলে গিয়ে ওষুধ চেয়েও না পাওয়ার কথা বললেন রোজিনা, সখিনা বেগমসহ কয়েকজন ভুক্তভোগি। তারা বলেন, যখনই ওষুধ চেয়েছি তখনই ওষুধ নাই বলেছে। আবার মাঝে মাঝে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ওষুধ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
মাতৃমঙ্গলে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী জানান, ওষুধগুলো বিক্রির জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে। তবে সরকার পতনের পর এ ওষু্ধগুলো বের করে বিক্রি করতে সাহস করেনি কর্তৃপক্ষ। আর এতেই এগুলো মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে মা ও কল্যান কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার (ক্লিনিক) ডা:কামরুল মনির রিবন বলেন, ওষুধ সরবারাহের সময়ই এগুলোর মেয়াদোর্ত্তীণ ছিল। এসব ওষুধ মেয়াদ না থাকায় আমরা পাওয়ার পরও রোগিদের সময়মত সরবরাহ করতে পারিনি। এগুলো আমাদের চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। রোগিদের আমরা সব সময় ওষুধ দিয়েছি। তবে মাঝে মাঝে রোগি কম থাকার কারণেও অনেক ওষুধ বেঁচে গেছে। তবে এখানে কোন দায়িত্ব অবহেলার কোন কিছু নাই।
এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ পরিচালক ডা. লেনিন তালুকদার জানান, যেসব ওষুধ দেয়া হয় তারমধ্যে বিভিন্ন দিবসের জন্য বাড়তি ওষুধও দেয়া হয়। যার কারণে কিছু ওষুধ বেঁচে যায়। আবার কখনো বিতরণের আগেই ওষুধের মেয়াদ থাকেনা। সেগুলোও বাতিল করতে হয়। এসব ওষুধ যাচাই বাছাই করে পরবর্তীতে ধ্বংস করে ফেলা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ওষুধ সরবরাহকারী প্রাতষ্ঠান থেকেই মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ সরবরাহ করা হয়। আর এর দোষ আমাদের উপর বর্তায়।
তবে কেন মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ অফিসের কর্তৃপক্ষ বুঝে নেয় এবং সময়মতো বিতরণ করেনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।
এদিকে দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন:








