বগুড়ার ধুনটের মথুরাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াহাটা উত্তরপাড়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটে যায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুন কয়েক মিনিটের ব্যবধানে চার পরিবারের বহু বছরের গড়া সংগ্রহ ধ্বংস করে দেয়। চোখের সামনে সব পুড়ে যেতে দেখেও অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া তাদের করার কিছুই ছিল না।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত চারটি ঘরই একই পরিবারের। মৃত আবুল হোসেন সরকারের তিন ছেলে শহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, সুইট রানা ও একমাত্র মেয়ে রিনা পারভিন আলাদা ঘরে থাকতেন। কিন্তু আগুনের গতিবেগ এতটাই তীব্র ছিল যে চারটি ঘরের ওপর কোনো প্রতিবন্ধকতাই কাজ করেনি।
স্থানীয়রা জানান, আগুনের লেলিহান শিখা এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে সবাই ঘর থেকে প্রাণ হাতে করে বেরিয়ে আসলেও রক্ষার মতো কিছুই নিতে পারেননি। নগদ টাকা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, আসবাব, পোশাকসহ সব ভস্মীভূত হয়ে যায়।
ব্যবসার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে জমি বিক্রি করেছিলেন সুইট রানা। সেই টাকা, নতুন ব্যবসার নকশা, এমনকি দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসও এক মুহূর্তে হারিয়ে এখন তিনি শূন্য।
তিনি বলেন, স্বপ্ন ছিল ঢাকায় গিয়ে নতুন করে দাঁড়াব। আগুন সবকিছু কেটে নিয়ে গেল। হাতেও কিছু রইল না, মাথার ওপর ছাদও নেই।
বোন রিনা পারভিন জানালেন, ঘর নির্মাণের জন্য জমিয়ে রাখা অর্থ ও সামগ্রী সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয় দু’জন শিক্ষক নুরুল আমিন ও ওমর ফারুক ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী। তারা জানান, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়। সময়মতো পানি ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি হাতে না পাওয়ায় গ্রামের মানুষ আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়।
ধুনট ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও চারটি পরিবারের ঘরে তখন আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মাসুদ রানা বলেন, দূরত্বের কারণে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। প্রাণহানি না ঘটলেও ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে শট সার্কিট থেকে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ ২০–২৫ লাখ টাকা। তবে স্থানীয়দের মতে, নগদ অর্থ, নির্মাণসামগ্রী, যন্ত্রপাতি ও গৃহস্থালী জিনিসপত্র মিলিয়ে ক্ষতি ৩০ লাখ টাকারও বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন:








