সোমবার

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

হরিরামপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত কৃষক

‎‎হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:৫৯

শেয়ার

হরিরামপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত কৃষক
ছবি: বাংলা এডিশন

হেমন্তের শুরুতেই মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়ে গেছে মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজের চাষ। এক দিকে কৃষকরা নবান্নের বোনা আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে নতুন ধান; অন্য দিকে মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ চাষে জমি তৈরিতে ব্যস্ত। কোনো কোনো এলাকায় আরও আগেই অনেকে এই পেঁয়াজ চাষ শেষ করেছে। তবে এখনও আমন কাটা শেষে জমি প্রস্তুত করছে মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ চাষের জন্য। ফলে কৃষক এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পেঁয়াজ লাগানোর পেছনেই। কারণ এই পেঁয়াজ তুলতে না তুলতেই একই জমিতে আবার আবাদ করা হবে হালি পেঁয়াজ। একই জমিতে লাগাতার তিন ফসল আবাদ করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।

‎ সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, এক দিকে কৃষকরা আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে অন্য দিকে মুড়িকাটা আা কন্দ পেঁয়াজ চাষে জমি তৈরি করে পেঁয়াজ রোপণ করছে। আবার কেউ কেউ আগাম এই পেঁয়াজ লাগিয়ে ক্ষেতে সেচ পদ্ধতিতে পানিও দিচ্ছে। অনেকে আবার ট্রাক্টর দিয়ে রাত দিন সমানে জমি প্রস্তুত করছে। অনেক কৃষককে আবার সেচ পদ্ধতি পেঁয়াজ লাগানো শেষে ক্ষেতে পানিও দিতে দেখা যায়।

‎উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগাইছি। সাড়ে ৫ হাজার টাকা মন গুটি পেঁয়াজ কিনে এই পেঁয়াজ লাগাইতেছি। ৩ বিঘা জমিতে সবমিলিয়ে ১ লাখ টাকার ওপরে খরচ হবে। এতে ভাল ফলন হলে প্রায় ২শ’ মন পেঁয়াজ হবে। আর দামের বাজার যদি ভাল হয় তাহলে আশা করছি বেশ ভালই লাভবান হতে পারব। তবে সবকিছু মিলিয়ে খরচের পরিমাণ অনেক। কম পক্ষে ২ হাজার টাকা মণ বিক্রি করতে পারলে হয়তো কৃষকের জন্য ভাল হবে।

‎ঝিটকা মধ্যপাড়া গ্রামের মেহের আলী বলেন, পেঁয়াজ লাগানো শেষ করেছি। এখন সেচের মাধ্যমে পানি দিচ্ছি। ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করছি। কামলা, সার আর সেচের জন্য বেশ ভালই খরচ হবে। তবে ফলনের পাশাপাশি দামটা ভাল পেলে লাভবান হতে পারব।

‎উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি বছরে মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১শ’ ৪০ হেক্টর জমি এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৫১৬ টন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আবাদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

‎তবে আবাদ চলমান থাকায় আবাদের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও জানা যায়।

‎উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান জানান, হরিরামপুর উপজেলায় বরাবরই কন্দ পেঁয়াজ ও হালি পেঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছরই পেঁয়াজ আবাদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরে কন্দ পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১১শ’ ৪০হেক্টর জমি। ফলন ভাল হলে প্রায় ১৯ হাজার ৫১৬ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করছি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এ উপজেলায় পেঁয়াজের চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। তবে আবাদের পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।



banner close
banner close