সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব (৪০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। প্রেম, প্রতারণা এবং দীর্ঘদিনের দেনা-পাওনার বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খতিবকে ৯ নভেম্বর রাতে বাড়ির উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি।
১২ নভেম্বর সকালে সলঙ্গা থানার চর ফরিদপুর এলাকার ফুলজোর নদীর খাড়াঘাটে নৌকায় মাছ ধরতে যাওয়া দুই ব্যক্তি নদীতে হাত-পা ও কোমরে ইট বাঁধা অবস্থায় ভাসমান এক মরদেহ দেখতে পান। পরে পরিবার এসে মরদেহটি খতিবের বলে শনাক্ত করে।
ঘটনার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। তদন্তে রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম খান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবু সিদ্দিকসহ একাধিক কর্মকর্তা অংশ নেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও মাঠ গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে ১৭ নভেম্বর রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন—মাসুদ রানা (৩৮), ফরিদুল ইসলাম (৪২), শাহিনুর খাতুন (৪০) এবং রফিকুল ইসলাম (৪০)।
তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত খতিবের সঙ্গে আসামিদের দীর্ঘদিনের অর্থ লেনদেনসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। পাশাপাশি খতিবের সঙ্গে চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শাহিনুর খাতুনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্ক এবং আর্থিক জটিলতা মিলেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ নভেম্বর রাতে শাহিনুর খতিবকে নদীর ঘাটে ডেকে নেয়। আগে থেকেই বাকি আসামিরা সেখানে অবস্থান করছিল। খতিব পৌঁছানোর পর তাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় পান করানো হয়। অচেতন হয়ে পড়ার পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর চাদর পেঁচিয়ে হাত-পা ও কোমরে ইট বেঁধে নৌকায় করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া চারজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত দল জানায়, ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল। হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:








