বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

কুমিল্লা'য় উচ্ছেদের নামে মুসলমানদের বাড়িতে ইসকনের জঙ্গী হামলা

কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:৫৯

শেয়ার

কুমিল্লা'য় উচ্ছেদের নামে মুসলমানদের বাড়িতে ইসকনের জঙ্গী হামলা
ছবি: বাংলা এডিশন

কুমিল্লা আর্দশ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর (খামার কৃষ্ণপুর) শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব মন্দির এলাকায় সহকারী কমিশনার ভূমি(সদর) তানজিনা ইসলাম, পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ(ইসকন) এর কুমিল্লা'র সদস্যরা বেআইনি ভাবে উচ্ছেদের নামে মুসলমানদের বাড়ি ঘর ভাংচুরসহ লুটতরাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে বাংলা এডিশন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ভুক্তভোগী কমলা বিবি, সাত্তার হোসেনের পরিবার ও ইমরান হোসাঈন ক্যামেরার সামনে এসে অভিযোগ করে বলেন-১৩ নভেম্বর(বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টায় কুমিল্লার যুগ্ম জজ আদালতের ডিক্রিজারী রায়ের কপিসহ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তানজিনা ইসলাম ও পুলিশ সদস্যরা আমাদের বাড়িতে উপস্থিত হন। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে উচ্ছেদের নামে ইসকন জগন্নাথ দেব মন্দিরের সদস্যরা আমাদের বাড়িতে ঢুকে অর্থ স্বর্ণলুট করে আমাদের বাড়িঘর উচ্ছেদ করে দেয়।

হাইকোর্টে চলমান মামলায় অতি উৎসাহি হয়ে অসহায় মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করে বাড়ি ঘর ভাঙ্গার হিন্দুত্ববাবাদী পৈশাচিকতা দৃশ্য মুসলিম সমাজ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অবলকন করেন অসহায়ের মতো।

অসহায় বৃদ্ধানারীর আর্তনাদ, নি:শ্ব মুসলিম পরিবারের অসহায়ত্ব ভারতে মুসলিমদের নির্যাতনের চিত্র প্রকাশিত হয় সেখানে।

ভুক্তভোগী ইমরান হোসাইন বলেন- সহকারী কমিশনার ভূমি(সদর) তানজিনা ইসলাম ও পুলিশের উপস্থিতিতে ইসকনের জঙ্গীরা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ লুটসহ আমাদের বাড়িঘর উচ্ছেদ করেন। যাহা সম্পূর্ণ বেআইনী কর্মকান্ড। মূলত ইসকনের স্বার্থ জড়িত থাকায় অস্বাভাবিক তড়িগড়ি করে উচ্চ আদালতে চলমান মামলায় মুসলিমদের বাড়িঘর ভাঙ্গায় তড়িগরি করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তানজিনা ইসলাম।

নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তানজিনা ইসলাম কে অনেক বার মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের মামলা চলমানের কাগজপত্রাদি দেখানোর চেষ্টা করলেও তিনি আমাদের মামলার কাগজপত্র না দেখে নিম্ন আদালতের ডিক্রিজারী রায়ের কপি এনে সরাসরি ইসকনদের পক্ষে কাজ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বাংলা এডিশন কে বলেন, সহকারী কমিশনার ভূমি(সদর) তানজিনা ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্টে কমলা বিবির(মুসলিম পরিবার) মামলা চলমান থাকার পরেও নিম্ন আদালতের রায় নিয়ে এসে সরকারী লোক বা পুলিশ সদস্যদের দিয়ে উচ্ছেদ না করে বহিরাগত ইসকন সন্ত্রাসী দিয়ে মুসলিম পরিবারের বাড়ি ঘর লুটতরাজ করার নির্দেশ দিয়ে আইনের বর্হিভূত কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন। যাহা সম্পূর্ণ বেআইনী।

উক্ত বেআইনি কর্মকান্ডের বিষয়ে কুমিল্লা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিনা

ইসলাম প্রতিবেদককে জানান- নিম্ন আদালতের নির্দেশে আমি উচ্ছেদ অভিযান করে থাকি। তবে উচ্ছেদ অভিযান কি বহিরাগত ইসকন সদস্যদের দিয়ে করানোর বৈধতা কতটুকু উক্ত প্রশ্নের যথার্থ উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বাংলা এডিশনের ক্যামেরার সামনেও কোন প্রকার বক্তব্য দিতে নারাজ।

বাংলাদেশে নানা সময় দেখা গেছে, ইসকন সদস্যরা মানুষের বাড়ি ঘরে হামলা চালানোর মত পৈশাচিক কর্মকান্ডের ঘটিয়ে আনন্দ পায়। ২০২১ সালের ২৬ জুন (শনিবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসকনের বিরুদ্ধে প্রবর্তক সংঘের নেতারা অভিযোগ তুলেন। প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী ভূমি আত্মসাৎ, প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে ভক্তদের দানের অর্থ লোপাটসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তৎকালীন সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

গত ২০২২ সালের ২২ মে (রবিবার) একুশে পদকপ্রাপ্ত আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী, কিংবদন্তী শিল্পী শেফালী ঘোষের নন্দনকাননস্থ বাড়ি দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রয়াত শেফালী ঘোষের পুত্র সুশান্ত দত্ত। তৎকালীন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুশান্ত বলেন, ‘ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের নাম ব্যবহার করে আমার বাবা গণসংগীত শিল্পী প্রয়াত ননী গোপাল দত্তের সম্পত্তি দখল করে নেয়। ২০১৬ সালে সিলেট ওসমানীনগরে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান ফেসবুকে ইসকনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ায় নির্মম ভাবে হত্যা করেন ইসকনের জঙ্গীরা। দেশে এমন নানা রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে একমাত্র ইসকন জঙ্গী সদস্যদের কারনে।

গত ১৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) কুমিল্লা সদর উপজেলার জগন্নাথপুর খামারকৃষ্ণপুর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানের নামে ইসকনরা মুসলিম পরিবারের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানান সাধারণ জনগণ। শুধু প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নন তারা।

ভুক্তভোগীদের দাবি- নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তানজিনা ইসলামের ক্ষমতার অপব্যবহার ও ইসকন সদস্যদের দিয়ে মুসলিমদের বাড়িঘরে উচ্ছেদের নামে যে ভাংচুর তান্ডব চালিয়েছে উক্ত ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করা।



banner close
banner close