ভোলা সফরে আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে আটকে রেখে তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবিতে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ উপদেষ্টারা হলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তাদের প্রায় ২০ মিনিট আটকে রাখা হয়। এ সময় নানা প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাঙ্গণ। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে তারা গাড়িতে চড়ে নিরাপদে চলে যান।
এর আগে, এদিন বিকেল ৪টার দিকে ভোলা জেলা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওই তিন উপদেষ্টা।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ভোলায় দীর্ঘদিন ধরে চলা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈন উদ্দীন ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আলোচনা সভায় ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ডিসেম্বর ভোলা-বরিশাল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। কিন্তু আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এখনো ভোলা-বরিশাল সেতুর নকশার কাজ শুরু হয়নি, এটি নীতিগত সিদ্ধান্তে আটকে আছে। এই বক্তব্যের প্রতিবাদেই আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হন।
সভা শেষে উপদেষ্টারা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে আন্দোলনকারীরা তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পথরোধ করেন এবং বিক্ষোভ চালান।
এ বিষয়ে আমরা ভোলাবাসী কমিটির সদস্য মেহেদি হাসান বলেন, সম্প্রতি পাঁচ দফা দাবিতে আমরা ভোলায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুললে স্ব-স্ব কতৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন এবং বলেছেন, আমরা যেন সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আমাদের আগে বলেছিলেন, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা তার কথায় রাজি হয়ে বাকি দাবিগুলো পূরণের জন্য বলেছিলাম। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছিলেন, ডিসেম্বর নাগাদ ভোলা-বরিশাল সেতুর ভিক্তিপ্রস্তরের কাজ শুরু হবে। অথচ আজ তিনি বললেন, এখনো নকশার কাজ শুরু হয়নি, এটি নীতিগত সিদ্ধান্তে আটকে আছে। আজ ভোলায় তিনজন উপদেষ্টা এসেছেন, ব্যবসায়ীদের চিন্তাভাবনা তাদের। আমরা জ্বালানি ও বাণিজ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করছি।
মো. মাহাদী হাসান নামে আরও এক আন্দোলনকারী বলেন, উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ডিসি অফিসের সভায় বলেছে, ভোলা-বরিশাল সেতু সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। যেহেতু তিনি কিছুই জানেন না, আমরা আমাদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের ভাষা জোরদার করেছি এবং উপদেষ্টাদের গাড়ির সামনে শুয়ে ছিলাম।
এদিকে আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত ভোলার বাইরে ভোলার গ্যাস ব্যবহার হতে দেবেন না।
আরও পড়ুন:








