শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪ পৌষ, ১৪৩২

কু‌ষ্টিয়ায় স্ত্রী সহ আ. লীগের নেতার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ২০:২৬

শেয়ার

কু‌ষ্টিয়ায় স্ত্রী সহ আ. লীগের নেতার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সংগৃহীত ছবি

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা রবিউল ইসলাম এবং তার স্ত্রী মোছা. বানু ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ বাদী হয়ে পৃথক এই মামলা দুটি করেন। তিনিই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামি রবিউল ইসলাম কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রবিউল ইসলাম আত্মগোপনে চলে যান। তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যার আসামী। এছাড়াও কুষ্টিয়ার আলোচিত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে অন্যের জমি আত্মসাৎ মামলার আসামী রবিউল ইসলাম।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রবিউল ইসলাম দাখিলকৃত বিবরণীতে ৩৭ লাখ এক হাজার ৯৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন রেখেছেন। এছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে তিনি অর্জন করেছেন আরও ১ কোটি ৯১ লাখ ৬১ হাজার ২১৭ টাকার সম্পদ।

পৃথক আরেকটি মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিবরণীতে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকার সম্পদ স্ত্রী মোছা. বানু ইসলাম দখলে রেখেছেন। ওই সম্পত্তি অর্জনে রবিউল ইসলাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি থাকাকালে পদ-পদবী ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অর্জনে সহায়তা করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, রবিউল ইসলাম স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন রেখে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দাখিলকৃত বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেওয়ার পরবর্তী তিন বছরে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন।

এ বিষয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ এপ্রিল দুদক কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল হাজি রবিউল ইসলামকে চিঠি দেন এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে ওই কার্যালয়ে হাজির হতে বলেন। এর প্রেক্ষিতে হাজি রবিউল দুদক কার্যালয়ে গিয়ে আরও কিছুদিন সময় চেয়ে আবেদন করেন। দুদক তার আবেদন গ্রহণ করে এক সপ্তাহ সময় দেয়। সর্বশেষ গত বছরের ২ মে হাজী রবিউল ইসলামের বরাবর সম্পদের হিসেব ও দায়-দেনার হিসাব চাওয়া হলে তিনি ২৯ মে বিবরণী দাখিল করেন।

এ বিষয়ে জানতে রবিউল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

তৎকালীন দুদক কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল জানান, ২০২২ সালে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি কাজ শুরু করেছিলাম।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মামলার বাদী দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ বলেন, দাখিলকৃত সম্পদের বিবরণী যাচাই-বাছাই করে তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন এবং দখল রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।



banner close
banner close