চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় বিয়ের মাত্র ২০ দিন পর জান্নাতুল ফেরদৌস (২১) নামে এক নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার সরল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মিনজিরীতলা এলাকার পিরানীর বাপের বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর সরল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পাইরাং এলাকার মুজিবুল হকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের মিনজিরীতলা এলাকার মো. শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে। শাহাব উদ্দিন স্থানীয় মোস্তাক আহমেদের দ্বিতীয় পুত্র।
পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা যায়, বুধবার সকাল ১১টার দিকে দীর্ঘ সময় কোনো সাড়া না পেয়ে জান্নাতুলকে ডাকাডাকি করেন তারা। ঘরের দরজা বন্ধ অবস্থায় সন্দেহ হলে টিনের চাল কেটে দেখা যায়, জান্নাতুল গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আছেন। পরে শ্বশুর তাকে নামিয়ে আনলেও ততক্ষণে তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।'
এদিকে, নিহতের স্বামী শাহাব উদ্দিন জানান, 'বিয়ের আগে এক যুবক তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতে পারেন। ওই যুবক বিয়ের পর তাঁর কাছে স্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি পাঠায়, যা নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন জান্নাতুল। "ঘটনার দিন সকালে আমরা একসাথে নাস্তা করি। আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আমি দোকানে মিষ্টি আনতে গেলে বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, সে গলায় ফাঁস দিয়েছে," বলেন শাহাব উদ্দিন।
অন্যদিকে, নিহতের পিতা মুজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, 'আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পরে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। আমি ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশে খবর দিই। আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।'
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর থেকে নবদম্পতির মধ্যে তেমন কোনো পারিবারিক কলহ দেখা যায়নি। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে।
এ ঘটনায় বাঁশখালী থানা পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান।
আরও পড়ুন:








