৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে পিএসসির ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশ করা হয়। এবারের বিশেষ বিসিএসে মোট ৬৬৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
উত্তীর্ণদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের ঝাউগারচর গ্রামের মেধাবী তরুণ আব্দুল্লাহ আল রাসেল। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।
নিজের এই অর্জন নিয়ে আবেগঘন কণ্ঠে রাসেল বলেন, আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, যিনি আমাকে এই সাফল্য অর্জনের তৌফিক দিয়েছেন। পরিবারের নিরলস সহযোগিতা আর শিক্ষকদের অনুপ্রেরণাই আমাকে এখানে এনেছে। মাদ্রাসা থেকে উঠে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এবং এখন শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম হওয়া—এটা শুধু আমার নয়, আমাদের জেলাল তরুণদের জন্যও এক অনুপ্রেরণা।
তিনি আরও বলেন, আমি চাই গ্রামের মেধাবী ছেলেমেয়েরা যেন নিজেদের সীমাবদ্ধতায় আটকে না থাকে। তারা যেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতে শেখে, কারণ পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ই সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি।
রাসেলের এই সাফল্যে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পুরো এলাকাজুড়ে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে। মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বলেন,রাসেল ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ও পরিশ্রমী ছিল। তার এই অর্জনে আমরা সবাই গর্বিত। সে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মান আরও বাড়িয়ে দিল।
আব্দুল্লাহ আল রাসেল পেশায় একজন শিক্ষানুরাগী পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তার বাবা সায়েম উদ্দিন একজন পরিশ্রমী কৃষক এবং মা কমলা খাতুন গৃহিণী। গ্রামের সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা এই তরুণের জীবনের গল্প অনেকটা সংগ্রাম, অধ্যবসায় ও বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি।
রাসেল তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন পাকুন্দিয়া উপজেলার মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসায়। ২০১৪ সালে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর একই প্রতিষ্ঠানে ২০১৬ সালে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৬৪ অর্জন করে মাদ্রাসা জীবন শেষ করেন।
পরবর্তীতে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে। দেশের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখে ২০২১ সালে অনার্সে সিজিপিএ ৩.৩৩ এবং ২০২২ সালে মাস্টার্সে সিজিপিএ ৩.৩৫ অর্জন করেন তিনি।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এবারের ৪৯তম বিশেষ বিসিএসে মোট ৩ লাখ ১২ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১ হাজার ২১৯ জন। পরে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৬৬৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন।
আরও পড়ুন:








