দেরিতে হলেও যশোরে খেজুর রস আহরণের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে অনেক গাছিই বাদ দিয়েছে গাছ কাটা। যারা টিকে আছে, তাদের কাছে প্রযুক্তির ছোঁয়া না পৌঁছানোয় চাহিদা বিবেচনায় আশানুরূপ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
সকালে শিশিরভেজা পথ, দিনে হালকা গরম, আর সন্ধ্যা নামলেই টের পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগমন। শীতের এই বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই যশোরের খাজুরা এলাকায় শুরু হয়েছে খেজুর রস আহরণের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যেই গাছিদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে গাছে চাঁচ দেওয়ার কাজে।
খাজুরার মিজানুর রহমান প্রায় ২৫ বছর ধরে খেজুরের রস ও গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বংশ পরম্পরায় পাওয়া এই পেশাই তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। তবে সনাতন পদ্ধতিতে গাছে চাঁচ দেওয়ার কাজটি যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে উৎপাদন ও মানেও পড়ছে প্রভাব।
গাছিরা জানিয়েছেন, রস ও গুড়ের দাম না বাড়লেও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম। উপরন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছের উৎপাদনেও দেখা দিচ্ছে ঘাটতি।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার খেজুর গাছ আছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭৫ হাজার গাছ থেকে প্রতি মৌসুমে আহরিত হয় প্রায় ৫ কোটি ২৪ লাখ টন রস, যা থেকে উৎপাদিত হয় প্রায় সাড়ে ৫২ লাখ টন গুড়।
খেজুর রস ও গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভবিষ্যতে আধুনিক চুলা, যন্ত্রচালিত গাছে ওঠার সরঞ্জাম এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
গত বছর যশোর থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খেজুরের গুড় রপ্তানি করা হয়েছিল। ওই মৌসুমে জেলার মোট রস ও গুড় উৎপাদনের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:








