বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

সিরাজগঞ্জে বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৩৮

শেয়ার

সিরাজগঞ্জে বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
ছবি: বাংলা এডিশন

সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ অসমাপ্ত রেখেই উদ্যোক্তাদের কাছে প্লট হস্তান্তর করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। প্লটের মাটি ভরাট না হওয়া, অসম্পূর্ণ রাস্তা, পানির সংকট ও অকার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যায় বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলীতে ৭১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গড়ে তোলা হচ্ছে বিসিক শিল্পপার্ক। ৮২৯টি প্লটে প্রায় ৫৭০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে এখানে। এর মধ্যে ৫৫০টি প্লট বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এবং ২৭৯টি দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর উদ্যোক্তারা প্লট হাতে পেলেও বেশিরভাগ প্লটই এখনো স্থাপনা নির্মাণের উপযোগী নয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এবং কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন শেষ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই প্রকল্প শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে।

মাটি ভরাট অসম্পূর্ণ থাকায় অনেক প্লটে পানি জমে রয়েছে, যা এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। ফলে উদ্যোক্তারা প্লট পেলেও নির্মাণকাজ শুরু করতে পারছেন না।

সরকার আর্ট প্রেসের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “যে জায়গায় আমাদের প্লট দেওয়া হয়েছে, সেখানে মাটি ভরাট হয়নি। এটি ফ্যাক্টরি নির্মাণের উপযোগী নয়।

গোল্ডেন প্রিমিয়াম ওয়েল মিলসের সত্ত্বাধিকারী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, “আমাদের প্লটের উচ্চতা রাস্তার তুলনায় ৫৬ ফুট নিচু। এতে নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। বি ব্লকে প্রায় পাঁচ লাখ সেফটি বালুর ঘাটতি রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, “বিসিক শিল্পপার্ক দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় শিল্পাঞ্চল হতে পারে। কিন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়কে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ বিসিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “যেসব স্থানে মাটি কম দেওয়া হয়েছে, সেসব জায়গা ভরাটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তা সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়ন শেষ না হলে এখানে বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং সরকারের শিল্পায়ন লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিল্পপার্কটি পুরোপুরি চালু হলে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অসমাপ্ত কাজের কারণে সেই সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত ৩০ জুলাই প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও অধিকাংশ উদ্যোক্তা এখনও নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি।



banner close
banner close