জনগণের নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে চাঁদপুর পৌরসভা এবং জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেওয়ারিশ পথকুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে টিকা (Rabies Vaccine) দেয়া হচ্ছে।
সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক। তিনি জানান, গত ১০ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে সোমবার (১৩ অক্টোবর) পর্যন্ত। তবে প্রয়োজন হলে সময়সীমা বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ কার্যক্রম প্রতিদিন দুই সেশনে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম সেশন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় সেশন রাত ৯টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত চলে। শহরের পথকুকুর যেন জলাতঙ্কে আক্রান্ত না হয় এবং মানুষ ও প্রাণী উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, এ লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চলমান কর্মসূচির আওতায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান কালীবাড়ি মোড়, নতুন বাজার, ইচলী ঘাট, ঢালির ঘাট, পালের বাজার, মেডিকেল কলেজ, হাজী মহসীন রোড, ছায়াবানী, কয়লা ঘাট, বড় স্টেশন, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট, চৌধুরী ঘাট, চিত্রলেখা মোড়, বিপনীবাগ, ইলিশ চত্বর, স্বর্ণখোলা, মাদ্রাসা রোড, বাসস্ট্যান্ড, চেয়ারম্যান ঘাট, জেলা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা, দর্জিঘাট, ষোলঘর ও পুরান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক পথকুকুরকে টিকা দেয়া হয়েছে। টিকাপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে চিহ্নিত করতে রং করে দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, “জনগণের উচিত কুকুরকে শত্রু মনে না করে প্রতিবছর জলাতঙ্ক টিকা দেওয়া। কুকুর কারো শত্রু নয়, বরং বন্ধু। ভালোবাসা ও যত্ন পেলে কুকুর কখনোই মানুষের ক্ষতি করে না।”
তিনি আরও জানান, এ কার্যক্রমে জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক অত্যন্ত আন্তরিক ভূমিকা রাখছেন। কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা থেকে ৭ সদস্যবিশিষ্ট অভিজ্ঞ ‘ডগ ক্যাচার’ দল আনা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের একজন মনিটরিং অফিসারসহ অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “প্রতিমাসের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনায় আসে যে শহরে পথকুকুরের সংখ্যা ও আনাগোনা বেড়েছে। জনগণের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পথকুকুরদের টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রাণিসম্পদ দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ কার্যক্রমে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা চাঁদপুর শহরকে জলাতঙ্কমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চাই। জনসচেতনতা বাড়লে ভবিষ্যতে জলাতঙ্কজনিত ঝুঁকি আরও কমে আসবে।
আরও পড়ুন:








