মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ধুলশুড়া ইউনিয়নে পদ্মার শাখা নদীতে দেখা গেছে বড় আকারের কুমির। এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। পদ্মা নদীর একটি শাখা নদীতে কুমিরটি দেখতে পায় এলাকার একাধিক নারী পুরুষ। ফলে গ্রামের মানুষজন ওই খালে গোসল করা থেকে শুরু করে জেলেদের মৎস্য শিকারেও ভীতির মধ্যে রয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনটি কুমির দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা যায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চর বংখুরি ও হরিরামপুর উপজেলার ধুলশুড়া, বোয়ালী ও হারুকান্দি ইউনিয়নের কাশিয়াখালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি সরু নদী যা পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে আশানুূরূপ পানি না হলেও এলাকাটি বেশ নিচু হওয়ায় নদীটি পানিতে টইটুম্বর। গত দশ দিনে আগে প্রথম কুমিরটি নজরে পরলেও বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই এই খালের কুমিটি দেখা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনটি কুমিরটি দেখা যায়। যার দৈর্ঘ্য প্রায় সাত/ আট হাত লম্বা হতে পারে বলে স্থানীয় জানান। তাদের ধারণা বর্ষার পানির সাথে হয়তো পদ্মা নদী থেকেই এই সরু নদীতে কুমিরগুলো প্রবেশ করেছে।
সরেজমিনে গেলে একাধিক ব্যক্তি জানান, ধুলশুড়ার বোয়ালী ও কাশিয়াখালি এলাকায় একাধিক কুমির দেখা যাওয়ায় জেলেরা মাছ শিকারে যেতে ভয় পাচ্ছে। এছাড়াও এই খালপাড়ের বাসিন্দারা প্রতিদিন গোসল, কাপড় ধোঁয়াসহ অন্যান্য কাজে এ খালের পানি ব্যবহার করেন। কিন্তু কুমির আতংকে এখন অনেকেই খালে নামার সাহস পাচ্ছে না। ফলে বিপাক পরেছে এলাকার শতশত পরিবার।
সদর উপজেলার চর বংখুরি গ্রামের মাজেদা আক্তার জানান, আজ সকালে পানি আনতে গেলে হঠাৎ একটা কুমির ঘাটের দিক আসতে দেখি। আমি ভয়ে দৌড়ে দূরে চলে যাই। পরে দেখতে পাই পাশের খালে ভাসতে থাকা একটি হাঁস কুমিরে ধরে নিয়ে চলে যায়। আমরা এখনও ছাড়তে পারি না৷
বোয়ালী এলাকার জেলে আলমাস জানান, কুমিরের ভয়ে আমাগো মাছে ধরা বন্ধ হয়ে। এমনিতেই দেশে পানি নাই। যা আছে এর ভেতর দিয়ে কয়ডা মাছ মাইরা খামু তাও কুমিরের জন্য পারতেছি না।
বড়ইচারা এলাকার নিতাই সরকার জানান, প্রায় দশ দিন যাবৎ কুমিরগুলো দেখা যাচ্ছে। এতে নদীপাড়ের মানুষদের মাঝে বেশ আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। জেলেরা ভয়ে অনেকটা মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে। এই কুমিরগুলোতে যেভাবে উদ্ধার করে নিরাপদে নেয়া যায় এ জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আমাদের অনুরোধ রইল,।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জহুরুল হক জানান, বিষয়টি আমি গতকালই অবগত হয়েছি। এটা বন্যপ্রাণী হিসেবে সংরক্ষণের দায়িত্ব বনবিভাগ। বনবিভাগ যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে সহযোগিতা চায়, তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিজা বিসরাত জানান, "বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। বনবিভাগের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।"
আরও পড়ুন:








