রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

পূজা মণ্ডপের সহ-সভাপতির লালসার শিকার মুসলিম শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:১৮

আপডেট: ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৫৯

শেয়ার

পূজা মণ্ডপের সহ-সভাপতির  লালসার শিকার মুসলিম শিশু
পূজা মণ্ডপে সহ-সভাপতি লালসার শিকার মুসলিম শিশু

একটা সময় খেলাধুলা, আনন্দ উল্লাস পড়াশোনা সবই করেছেন এক সাথে। তবে এখন লামিয়া আরিফা গ্রামে থাকলেও নেই তাদের আরেক বান্ধবী।আমরা তার ছদ্মনাম দিচ্ছি তানিয়াআমাদের দেয়া নাম তানিয়াও সেদিন ভজেন্দ্রের বাড়ির গেটের সামনে ফাকা জায়গায় বান্ধবীদের সাথে খেলাধুলা করছিলো। ওই দিন সবার মধ্য থেকে টাকা চকলেটের লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিজ শোবার ঘরে নিয়ে যায় আশ্রয়ণ প্রকল্প পূজা মণ্ডপের সহ-সভাপতি ভজেন্দ্র সরকার। এরপর হাত-পা এবং মুখ বেঁধে আট বছরের ওই শিশুটির উপর অমানসিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করেছে ভজেন্দ্র।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সুরাবাড়ি এলাকায়। পরিবার স্থানীয়রা বলছে, অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তিন বান্ধবী মিলে খেলাধুলা করছিলো, এমন সময় সুযোগ বুঝে ওই শিশুকে ডেকে নিয়ে হাত-মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন এই নরপিচাশ ভজেন্দ্র।

একদিকে চলছে পূজা অন্য দিকে মণ্ডপের সহ-সভাপতির লালসার স্বীকার এক অবুঝ শিশু। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে, এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে সটকে পড়ে এই কুলাঙ্গার। তবে, তাকে স্থানীয়রা হোটেল থেকে ধরে এনে গাছের সাথে বেঁধে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে।

ভজন্দ্রর বিরুদ্ধে এত এত অভিযোগের খবর পেয়ে গভীর অনুসন্ধানের লক্ষ্যে বাংলা এডিশন টিম গিয়েছিলো নির্যাতনের স্বীকার ওই শিশু এবং অভিযুক্ত ভজেন্দ্রর বাড়িতে। এসময় বাংলা এডিশন টিমের উপস্থিতি দেখে সেখানে জড়ো হতে থাকে স্থানীয়রা। একে একে বলতে থাকেন ভজেন্দ্রর কুকর্মের কথা।

এসময় নির্যাতনের শিকার শিশুটির মামা অভিযোগ করে বলেন, মাত্র দশ টাকার লোভ দেখিয়ে একাধিক শিশুকে ধর্ষণ করেছেন ভজেন্দ্র। এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক নারীদেরও নানা প্রলোভন দেখিয়ে করেছেন ধর্ষণ। একজন হিন্দু ধর্মের মানুষ হয়ে মুসলিম শিশুদের সাথে এমন জঘন্ন কাজ করায় তার ফাঁসির দাবিও করেন তিনি।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, এর আগেও দুটি মামলায় ছয় মাস করে জেল খেটেছে ওই নরপিচাশ। এই ঘটনার পরও তিনি পরিবারটিকে হুমকি দিয়ে বলেন, এর আগেও তিনি জেল খেটেছেন। তার কিছুই হবে না। ছয় মাস পর আবার বের হবেন বলেও হুমকি দিয়েছে ভজেন্দ্র।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির বড় বোনের অভিযোগ, ভজেন্দ্র হিন্দু হওয়ায় তাকে কিছুই করতে পারবে না নির্যাতনের স্বীকার শিশুটির পরিবার। তাকে রক্ষা করতে হিন্দু নেতারা সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সরকারের গাফলতি প্রশানের বিচারহিনতায় দেশে পর্যন্ত যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে একটিরও বিচার হয়নি। ফলে, এই ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভজেন্দ্র নিজ বাড়িতেই চলে দেহব্যবসা। তাঁর স্ত্রী সন্তানও একাজে জড়িত। এর আগেও মুসলিম নারীদের বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিয়েছে ভজেন্দ্র।

এই পরিস্থিতিতে, নিজেদের সন্তান নিয়েও রয়েছে শঙ্কায় রয়েছেন এই নারী।

তারা অভিযোগ করে জানায়, এর আগেও একাধিক নারীর সাথে এমন অনৈতিক কাজ করেছে এই হিন্দু কুলঙ্গার। তবে, কেও লজ্জায় খোলেনি মুখ। প্রশানের কাছে স্থানীয়রা দাবি জানিয়ে বলেন, ওই হিন্দু পরিবারকে দ্রুত এই এলাকা থেকে বিতারিত করার এবং সেই সাথে অভিযুক্ত হিন্দু নরপিচাশ ভজেন্দ্রের ফাঁসির দাবিও জানায় তারা।

এই কুলাঙ্গারের কারণে সেখানে থাকা ত্রিশটি হিন্দু পরিবার হয়েছেন লজ্জিত। এরপরও এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে বিভেদ বাড়ার শঙ্কায়ও আছেন তারা।

মুসলমানদের কারণেই সেদিন প্রাণে বেঁচে গেছে ওই কুলাঙ্গার এমন দাবি এই স্থানীয় বাসিন্দার।

এবিষয়ে আমরা কথা বলি অভিযুক্ত ভজেন্দ্রের স্ত্রীর সাথেও। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও তিনি জানান, অপরাধীর শাস্তি হোক।

তবে, দেহব্যবসার বিষয়টি রিতিমত অস্বীকার করেছে ভজেন্দ্রর স্ত্রী। এনিয়ে মানুষ গুজব ছাড়াচ্ছে বলেও দাবি তারা।

ঘটনার দিনই নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত ভজেন্দ্রের নামে নারী শিশু নির্যাতন আইনে করেছেন মামলা। বিষয়ে কাশিমপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মুঠোফোনে বলেন, ভজেন্দ্রর আগে মামলা সম্পর্কে তাঁর জানা নেই। তবে, প্রাথমিকভাবে শারীরিক সম্পর্ক এবং হাত- পা বেধে নির্যাতনের বিষয়ে জবানবন্দি দিয়েছে শিশুটি।

এদিকে, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় গাজীপুরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে, স্থানীয়রা শুক্রবার রাতে করেছে বিক্ষোভ মিচিলও। তারা বলছে, প্রশাসনের বিচারহিনাতায় প্রতিনিয়তই ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে। তাদের দাবি, দেশে একটি ধর্ষণের বিচার হলে আর কোনো ধর্ষক আর ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ করার সাহস পেতো না।

ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=qpczIlA1CHc&t=6s



banner close
banner close