উদ্ধোধনের প্রায় ৬বছর পরও জনবল সংকট আর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে চালু হয়নি বান্দরবানের লামা উপজেলার ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। যে উদ্দেশে মা ও শিশু কেন্দ্রটি করা হয় তার সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী।যার কারনে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা পাহাড়ী-বাঙ্গালী শিশু-নারী-পুরুষ দুর্ভোগে পড়ছে।আবার ডেলিভারিসহ জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাকে নিয়ে যেতে হয় পাশ্ববর্তী লোহাগাড়া বা চট্টগ্রামে। এনিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়র জানান, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সপ্তায় দুইদিন একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সেই সেবাও মিলছেনা। হাসপাতালে কখন ডাক্তার আসে, কখন যায় স্থানীয়রা জানেনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ৪ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যা হাসপাতালটি নির্মিত হয়। ১০শয্যা এই হাসপাতাল ভবনে একটি স্টাফ কোয়ার্টার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫মে হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর এবং ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারী উদ্বোধন করা হয়।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা মো:আলী হোসেন বলেন,সরই ইউনিয়নে ১০শয্যার একটি হাসপাতালের নাম দেওয়া হয়েছে,বাস্তবে ১ শয্যার ব্যবস্থাও নেই এবং দেখভাল করার কেউ নেই,সবসময় বন্ধ থাকে।
চিকিৎসা নিতে আসা মো.সোহাগ জানান,নিজের ও স্ত্রী সন্তানের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এসেছেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এসে দেখেন হাসপাতালের গেট বন্ধ, কেউ নেই।এই চিত্র যেন নিত্যদিনের।
লামা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বাপ্পী মারমা বলেন,১০শয্যা হাসপাতালটির এখনো পদমর্যাদার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।আমরা ইচ্ছা করলেও জনবল নিয়োগ করতে পারবো না। কারণ এখনো পদ সৃষ্টি হয়নি।সপ্তাহ দুইদিন (বুধ-বৃহস্পতিবার) স্বল্প পরিসরে কয়েকজন স্টাফ দিয়ে সীমিত আকারে সেবা দিলেও ঔষধ না থাকায় অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে ঔষধ নেই।যার কারণে রোগি আসেনা। অন্য কোন কেন্দ্র থেকেও কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দেওয়া সম্ভব না।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আহবায়ক রাজুমং মারমা বলেন,‘দুইদিন কেন,সপ্তায় খোলারদিনগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া উচিত’।
বিষয়টি কৃতপক্ষের সাথে আলাপ করবো।
জেলার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক লেলিন চাকমা বলেন,অবকাঠামো থাকলেও জনবল সংকট রয়েছে।যার কারণে কেন্দ্রটি চালু করা যাচ্ছে না।বর্তমানে কোন ঔষধ পত্র সরববরাহ নেই।চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচি (এইচএনপিএসপি) শেষ হয়েছে জুন ২০২৪-এ, এবং এর পরবর্তী পঞ্চম এইচএনপিএসপি প্রোগ্রামটি জুলাই ২০২৪-এ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অনুমোদন পায়নি। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আমাদের কার্যক্রম গুলোর সেবা দেওয়া যাবে। তবে সরই ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতালের পদ মঞ্জুরি এখনো হয়নি। কাঠামো অনুযায়ী বিভিন্ন পদে মঞ্জুরির বিষয়ে অধিদপ্তর ও পার্বত্য জেলা পরিষদ পত্র চালাচালি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:








