কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পয়েন্টসহ মেরিনড্রাইভ রোডে অবৈধ মোটরসাইকেল ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। এক শ্রেণীর অসাধু যুবকরা অল্প টাকায় সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এই অবৈধ মোটরসাইকেল কক্সবাজার নিয়ে আসছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। পাশাপাশি এই অবৈধ মোটরসাইকেল নিরাপধে চলার জন্য গুটি কয়েক অসাধু পুলিশ সদস্য নগদে এবং মেরিনড্রাইভ রোড থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে চালু হয়েছে রেন্ট বাইক ব্যবসা। যা পর্যটকদের সম্প্রতি সময়ে ব্যাপক আর্কষণ করেছে। দুরদুরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা কক্সবাজার এসে কম খরচে বাইক নিয়ে পুরো কক্সবাজারের পর্যটন স্পষ্ট গুলো ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছে। তবে এই বাইক কিংবা মোটরসাইকেলের বিষয়ে পর্যটক বাইক প্রেমীদের অভিযোগও রয়েছে।
ঢাকার মালিবাগ এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র আশরাফুল আলম সজিব বলেন, আমরা ঢাকাতে বাইক চালাতে অভ্যস্থ। কিন্তু সেখানে প্রোপার ডকুমেন্ট ছাড়া বাইক চালানো সম্ভব না। তবে কক্সবাজার এসে দেখলাম এখানে কোন ডকুমেন্ট লাগেনা। অধিকাংশ বাইকের বৈধ কাগজপত্র নেই। বা অনেক বাইক শো রুম থেকে ক্রয় করা না। বর্ডার ক্রচ বাইক চলছে পুরো শহর ও মেরিন ড্রাইভ জুড়ে। পাশাপাশি নেই হেলমেট ও মোটরসাইকেলের লাইসেন্স। তবে এসব ছাড়া বাইক ড্রাইভ করলেও পুলিশ কোন প্রকার ডিস্টার্ব করেনা। যে কারনে অবৈধ কিংবা লাইসেন্স বিহীন বাইক হলেও কোন ঝামেলায় পড়তে হয়না।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ুয়া ছাত্র মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আমি নিজেই ঘন্টা প্রতি ২০০ ও ৩০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়েছি। পর্যটকরা সমুদ্রে বেড়াতে এসে অনেকেই এই বাইক ড্রাইভ নিয়ে মহা খুশি। তবে আমি এই এলাকার সন্তান হিসেবে বলবো পর্যটন শহর কেন্দ্রিক যে বাইক গুলো চলছে সব গুলো বৈধতার আওতায় আনা জরুরি। কারন অবৈধ বাইক নিয়ে যে কোন অপরাধ করতে অপরাধীরা ভয় পাইনা। সুতরাং দেশের বর্তমান পেক্ষাপট এবং সরকারি রাজস্বের কথা চিন্তা করে অবৈধ এবং লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান জরুরি বলে মনে করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেরিন ড্রাইভ এলাকার এক বাইক ব্যবসায়ি জানান, কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে টানা বা কাগজপত্র বিহীন মোটরসাইকেল কিংবা বর্ডারক্রচ মোটরসাইকেল চলছে। ঠিক তেমনি মেরিন ড্রাইভ রোডেও চলছে। সুতারাং তাতে কোন অসুবিধা হচ্ছেনা। আরেক ব্যবসায়ি বলেন, রেন্ট বাইক নিয়ে যারা ব্যবসা করছে তারা মাসিক ট্রাফিক পুলিশকে মাসোহারা দিচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ কলাতলী বক্সকে দিতে হয় ৩ হাজার, হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে দিতে হয় দেড় হাজার, ইনানী ফাঁড়িকে দিতে হয় দেড় হাজার ও রেজুখাল ব্রীজে যে পুলিশ চেকপোস্ট করে তাদের দিতে হয় দেড় হাজার। সর্বপোরি মাসে এই প্রেমেন্ট করলে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়না বলে জানান এই ব্যবসায়ি।
বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার শহরে বর্তমানে ব্যাপক অবৈধ মোটরসাইকেল ও লাইন্সেস বিহীন মোটরসাইকেল রয়েছে। সম্প্রতি আমরাও অভিযান করেছি। তবে এসবের বিরুদ্ধে ট্রাফিক বিভাগকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অবৈধ ও লাইন্সেস বিহীন মোটরসাইকেল এর বিরুদ্ধে ট্রাফিক বিভাগের ধারাবাহিক অভিযান চলছে। সম্প্রতি কয়েক দিনে বেশ কিছু অবৈধ মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া রেন্ট বাইক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ট্রাফিক বিভাগের কিছু অসাধু সদস্য কর্তৃক মাসোহারা আদায়ের বিষয়টি তার জানা নেই বলে দাবী করেন। তিন বলেন, উপরোক্ত বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হবে। যদি সত্যতা মেলে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:








