রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সাত মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন জামিনে মুক্ত

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৬:১৫

শেয়ার

সাত মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন জামিনে মুক্ত
ছবি: সংগৃহীত

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিগত ১৬ বছরের পিপি, বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট চন্দন কুমার পাল অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। চন্দন কুমারের মুক্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশিজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

সোমবার ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে আটটার দিকে শেরপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল হতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যপক সমালোচনা হচ্ছে।

শেরপুর জেলা কারাগার সূত্র জানায়, পাঁচ আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আদোলনের মাস্টার মাইন্ড ও হত্যা মামলাসহ সাত মামলার আসামি এডভোকেট চন্দন কুমার পাল গত নয় সেপ্টম্বর উচ্চ আদালতের আদেশে শেরপুর জেলা হাজাত থেকে মুক্তি পায়। মুক্তির পরে জেল গেট থেকে ওই দিনই ১৯৭৪ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় পুলিশ চন্দন পালকে আবারো গ্রেপ্তার করে। ২৮ সেপ্টম্বর শেরপুর আদালত থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চন্দন কুমার পালের জমিন হলে সোমবার সকালে তিনি মুক্তি পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর জেলা কারাগারের জেলার আব্দুস সেলিম।

এই জামিনের বিষয়টি মঙ্গলবার চাউর হলে ব্যপক সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশিজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, জামিন দেওয়া বিচারকের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারক লিপি জমা দিবেন। এবং এখানে যেসব আইনজীবী এই খুনির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন তাদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক মামুনুর রহমান বাংলা এডিশনকে বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ও হত্যা মামলাসহ সাতটি মামলার আসামি, হাসিনা সরকারের দোসর ফ্যাসিস্ট চন্দন কুমার পাল কিভাবে জামিন পেলেন। তার পক্ষে যেসব আইনজীবী সাফাই গেয়েছেন তাদের বিবেক ত বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদী আমলে মৃত ছিল। গত ১৬ টি বছর সে পিপি পদে থেকে ভিন্নমতের নাগরিকদের কত জুলুম, মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছেন তা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন। আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি, তিনি ইতিমধ্যে ভারতে চলে গেছেন। মহান আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম, যারা এই খুনির সাফাই আদালতে করেছেন তাদেরও একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

এবি পার্টির জেলার সদস্যসচিব মুকসিতুর রহমান হিরা বলেন, এখনো রক্তের দাগ মুছে যায়নি। কিভাবে আওয়ামী লীগের এই হেভিওয়েট নেতা যিনি জুলাই আন্দোলন ঠেকাতে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। তাকে জামিনে সহায়তা যারা করেছেন, আসলে তারা কিভাবে বিবেককে বিসর্জন দিয়ে এমন কাজ করেছে তা আমার বোধগম্য নয়।

এনসিপির জেলা আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার লিখন মিয়া বলেন, ছাত্রজনতার রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর চন্দন কুমার পাল যিনি শেরপুরের শহীদ মাহবুব, সবুজ ও সৌরভ হত্যাসহ ছাত্র জনতার আন্দোলন ঠেকাতে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন, এমন একজন অপরাধীর জামিন দেয়ার বিষয়টি শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারের পতাকা উত্তোলনের শামিল। আমার ভাইদের হত্যার সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ জড়িত, এমন অপরাধীরা কেনো জানি দ্রুত জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে। তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে বাইরে এসে আবারও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, বিগত দেড় দশকের বেশি সময় এডভোকেট চন্দন কুমার পিপি থাকাবস্থায় ভিন্নমতের মানুষদের এমন কোন জুলুম নেই, যা তিনি আদালতের মাধ্যমে তা ভোগ করিয়েছেন। ছাত্রজনতার আন্দোল ঠেকাতে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এমন একজন প্রকাশ্য অপরাধীর জামিনের সাথে নিশ্চয়ই কোন একটি মহল জড়িত, নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের মুখ উন্মোচন জরুরি। তাদেরকেও জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছে শুনেছি কিন্ত কিভাবে হলো জানি না।



banner close
banner close