সোমবার

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

ভূঞাপুরে নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩১

শেয়ার

ভূঞাপুরে নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
ছবি : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফজলুল হকের বিরুদ্ধে যমুনা নদীতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নদীপথে চলাচলকারী মাঝি-জেলে ও বালুবাহী নৌকা-বাল্কহেড মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছেন। বালুবাহী নৌকা ও বাল্কহেড আকারভেদে মাসিক ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত হয়। জেলেদেরও প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। চাঁদা না দিলে অভিযান চালিয়ে নৌকা, জাল ও বালুবাহী বাল্কহেড আটক করা হয়। টাকা দিলে সেগুলো ফেরত দেওয়া হলেও, না দিলে জাল ও নৌকা পুড়িয়ে ফেলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, মাসিক চাঁদা না দিলে নদীতে মাছ ধরা যায় না। এমনকি কখনও মূল্যবান জাল কেড়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ কারণে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে নিয়মিত টাকা দিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

বালুবাহী নৌকা ও বাল্কহেড মালিকরাও একই অভিযোগ করেছেন। তাদের ভাষায়, প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয় না, কারণ ইনচার্জ ফজলুল হকের "হাত অনেক লম্বা"।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, ফজলুল হক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি নৌকা ভাড়া করেন, কিন্তু ভাড়া চাইতে গেলে নৌকার মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এই ভিডিও প্রকাশের পর এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বালুবাহী নৌকা আটকিয়ে ৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পরে বিষয়টি এক গণমাধ্যমকর্মী ভিডিও ধারণ করেন যা নজরে এলে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করেছে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে পশু নির্যাতনেরও অভিযোগ উঠেছে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি গর্ভবতী একটি ছাগলকে মোটরসাইকেলের পেছনে বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব চাঁদাবাজি ও অনিয়মের কারণে যমুনা নদীপাড়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। তারা দ্রুত ফজলুল হকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত গোবিন্দাসী নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফজলুল হক এইসব অস্বীকার করে বাংলা এডিশন টিমকে সরাসরি দেখা করতে বলেন।

টাঙ্গাইল নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা বলেন, অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



banner close
banner close