রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সড়কে থামছে না চাঁদাবাজি, এসি ল্যান্ডের নামেও তোলা হচ্ছে চাঁদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:১৯

আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:২৮

শেয়ার

সড়কে থামছে না চাঁদাবাজি, এসি ল্যান্ডের নামেও তোলা হচ্ছে চাঁদা
ছবি: বাংলা এডিশন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সড়কে চাঁদাবাজি। পৌরসভার টোলের নামে নির্দিষ্ট কয়েকজনকে বসিয়ে প্রকাশ্যে চলছে অর্থ আদায়। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে ধরনের চাঁদাবাজির দৃশ্য। চাঁদা উত্তোলনকারীদের দাবি সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুমতিতেই চাঁদা উঠছে। গাবতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বীকার করছেন তার নামেই এই টোল আদায় হচ্ছে। এদিকে জেলা প্রশাসক বলছেন, অনুমোদিত স্ট্যান্ড ছাড়া চলতি গাড়ি থেকে টোল নেওয়া অপরাধ। গাবতলীর ওসি বলছেন, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, ব্যবস্থা শুধু মুখেই বলে শেষ করছে প্রশাসন, নেওয়া হয় না ব্যবস্থা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সিএনজি অটো ১০ টাকা, বড় ট্রাক ১০০ টাকা এবং ছোট ট্রাক প্রতি ৫০ টাকা করে নিচ্ছেন তরিকুল নামে এক ব্যক্তি। চাঁদা উত্তোলনকারী ব্যক্তি বলেন, দৈনিক ৫০০ টাকা হাজিরায় তিনিসহ কয়েকজন মিলে গাবতলী পৌরসভা গাবতলী উপজেলার সহকারী কমিশনারের নামে চাঁদা তুলতে নির্দেশ দেন স্থানীয় রনি নামে এক ব্যক্তি।

গাবতলী পৌরসভার ৩টি স্থানে নিয়মিত চাঁদা তোলা হচ্ছে,গাবতলী ২নং রেললাইন, দাঁড়াইল বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে (যেটি ইউনিয়নের সীমানায় অবস্থিত), নারুয়ামালা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। উল্লেখ্য, এসব চাঁদাবাজির কারণে গাবতলী নারুয়ামালায় প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর দাঁড়াইল বাজার এলাকায় তো জ্যাম নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, যদি পৌরসভার নামে টাকা তোলা হয়, তবে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় কেন টোলের নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে?

পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, নির্দিষ্ট হারে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে গাড়ি যেতে দেয়া হয় না। একপ্রকার জোর-জবরদস্তিই চলছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবহন চালকরা।

চাঁদা উত্তোলনকারীরা দাবি করছে, তারা নাকি সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর অনুমতিক্রমে অর্থ নিচ্ছেন।

বিষয়ে গাবতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ বলেন, চাঁদা তো আমার নামেই উঠবে। আমি গাবতলী পৌরসভার প্রশাসক। আপনারা চাইলে দুদক অথবা সেনাবাহিনীকে অভিযোগ দিতে পারেন। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবে।

অন্যদিকে গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেরাজুল ইসলাম জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোথাও যদি চাঁদা তোলা হয় এবং সেটি প্রমাণিত হয়, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, শুধু পৌরসভার অনুমোদিত স্ট্যান্ডেই টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে। এর বাইরে কেউ যদি অর্থ আদায় করে, তবে সেটি অবৈধ। থানা পুলিশকে বলা আছে, এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে।

২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু সময়ের জন্য চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি আবার নতুন করে শুরু হয়েছে।



banner close
banner close