ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। জায়গার অভাবে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অনেক রোগীকেই বাধ্য হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের ফ্লোর বা কাঠের বেঞ্চে।
জানা গেছে, ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ভবনটির কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের শেষের দিকে। শুরু থেকেই ধীরগতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও, ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর হাসিনা সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণ কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ শেষ করে কাজ ফেলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি পুরনো দুইতলা ভবনে এখন চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতালের সব কার্যক্রম। নিচতলায় রয়েছে বহিঃবিভাগ ও চিকিৎসকদের চেম্বার, আর দোতলার মাত্র তিনটি কক্ষে রাখা হচ্ছে ভর্তি রোগীদের—নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সব ধরনের রোগী। সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই চোখে পড়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড, যেখানে খোলা পরিবেশেই চলেছে এই সংক্রামক রোগের চিকিৎসা।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, রোগীর চাপ বাড়লে শয্যার অভাবে অনেককেই ফ্লোরে কিংবা কাঠের বেঞ্চে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তবে স্থান সংকট বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন ভবনটি নির্মাণ না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে ভবন নির্মাণের জন্য আনা রডসহ বিভিন্ন মূল্যবান নির্মাণসামগ্রী দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় সেগুলো নষ্ট হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ নোমান মিয়া বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জায়গার অভাবে রোগীরা কষ্ট করছেন। ভবনটির কাজ শেষ হলে রোগীদের শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সরাইল উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত হাসপাতালের ভবন নির্মাণ কাজ আবার শুরু করে তা দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, সরাইলের কয়েক লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রটি এভাবে অচল হয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন:








