চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে বস্তায় আদা চাষ। পরিত্যক্ত জায়গায় চাষাবাদ করে খরচের তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা বস্তায় আদা আবাদে ঝুঁকছেন। গত এক বছরের ব্যবধানে মিরসরাইয়ে বস্তায় আদা আবাদ বেড়েছে দ্বিগুণ। বস্তা প্রতি ৫০-৫৫ টাকা খরচে আদা পাওয়া যায় ৭৫০ থেকে এক কেজি পর্যন্ত, যার বাজার মূল্য ১২০-১৫০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাইয়ে ২০২৪ সালে বাণিজ্যিক ভাবে বস্তায় আদা চাষ শুরু হয়। ওই বছর ৮ হাজার বস্তায় আদা আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর ১৫ হাজার বস্তায় আবাদ হয়েছে। এক বস্তা আদা আবাদে খরচ হয় ৫০-৫৫ টাকা। তবে স্বল্প পরিসরে আবাদ করলে খরচ আরও কম হতে পারে। প্রতি বস্তায় ফলন হয় ৭৫০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত।
জানা গেছে, চলতি বছর বারইয়ারহাট পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি বস্তায় আদা আবাদ হয়েছে। ওই এলাকায় ৫ হাজার বস্তায় আবাদ করা হয়। এছাড়া হিঙ্গুলী, খৈয়াছরা, করেরহাট ও মিরসরাই সদর ইউনিয়নে বস্তায় আদা আবাদ করা হয়েছে।
বারইয়ারহাট পৌরসভার উত্তর জামালপুর গ্রামের আদা চাষি মকসুদ আলম জানান, তিনি ১৫ বছর পর প্রবাস থেকে দেশে ফিরে মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় বস্তায় আদা আবাদ শুরু করেন। ৪ মাস পূর্বে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৫০০ বস্তার জন্য বীজ দেওয়া হয়। পরে তিনি আরও সাড়ে ৬ হাজার বস্তা মিলিয়ে ৭ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেন। এতে তার খরচ হয় প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ৭ হাজারের মধ্যে ২ হাজার বস্তা নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে তার ক্ষেতে ৫ হাজার বস্তা আদা রয়েছে। বস্তায় ফলন আসতে শুরু করেছে। তবে ৯ মাস পূর্ণ হলে বস্তা থেকে আদাগুলো উত্তোলন করা হবে। ফলন ভালো হলে দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।
মিরসরাই কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনিকা মজুমদার বলেন, বস্তায় আদা চাষ খুবই লাভজনক। প্রবাসী মকসুদ আদা চাষে আগ্রহী হলে কৃষি অফিসের সহযোগীতায় আমি তাকে ৫০০ বস্তার বীজ, সার ও কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করেছি। এছাড়া নিয়মিত আদা ক্ষেতটি পরিদর্শন করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মিরসরাইয়ে বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চলতি বছর গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বস্তায় আবাদ হয়েছে। এটি খুবই লাভজনক। ঘরের আঙ্গিনা কিংবা বাড়ির ছাদেও বস্তায় আদা চাষ করা হয়। লাভের তুলনায় খরচ ও পরিশ্রম কম হওয়ায় কৃষকরা বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছে।
আরও পড়ুন:








