ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতির পর বিদ্যুৎ সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং স্থানীয় বসতি পড়েছে হুমকিতে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিতে উত্তোলন চললেও এতে ঝুঁকিতে পড়েছে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি রিভারক্রসিং টাওয়ার, চরসোনারামপুর এলাকার শতবর্ষী চর এবং আশপাশের কৃষিজমি ও বসতবাড়ি।
২০ আগস্ট ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য মেঘনা নদীর একটি অংশ থেকে তিন মাসের জন্য বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। মীর আক্তার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দিয়ে এক কোটি ৬৩ লাখ টাকার বেশি সরকারি ফি আদায় করা হয়। পরদিনই সীমানা চিহ্নিত করে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে বালু উত্তোলন শুরুর পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। তাদের দাবি, যেখানে বালু তোলা হচ্ছে, তার কাছাকাছি চরে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বসতি রয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে চরসোনারামপুর নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে, আর ভাঙনের মুখে পড়বে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র, ধানের বাজার এবং আশেপাশের বসতবাড়ি ও কৃষিজমি।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) স্থানীয় দপ্তরও। তারা রিভারক্রসিং টাওয়ার হুমকিতে পড়তে পারে উল্লেখ করে বালু উত্তোলন বন্ধে আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২২ সালেও উপজেলা প্রশাসনের এক প্রতিবেদনে নদীভাঙন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের টাওয়ারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল। সে সময় জেলা প্রশাসনও রিপোর্টের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলো।
চরসোনারামপুরের বাসিন্দা ও আশুগঞ্জ জেনারেল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এইভাবে বালু তুলতে থাকলে শুধু চর না, পুরো আশুগঞ্জ বন্দর ও ধানের বাজার ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম জানান, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের ভিত্তিতেই ৬১ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের ইজারা দেয়া হয়েছে।’
তবে স্থানীয়দের দাবি, উন্নয়ন প্রয়োজন হলেও তাতে যেনো পরিবেশ, জীবন-জীবিকা এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
আরও পড়ুন:








