রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চকরিয়া থানা হাজতে দূর্জয় হত্যাকান্ড আদালতের নির্দেশে ঘটনায় সাবেক ওসি ও প্রধান শিক্ষকসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৯:৪৮

শেয়ার

চকরিয়া থানা হাজতে দূর্জয় হত্যাকান্ড আদালতের নির্দেশে ঘটনায় সাবেক ওসি ও প্রধান শিক্ষকসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের চকরিয়া থানা হাজতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দুর্জয় চৌধুরীর (২৫) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ২৭ দিন পর অবশেষে কক্সবাজার দায়রা ও জজ আদালতের বিচারকের নির্দেশে চকরিয়া থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দায়ের হওয়া মামলায় চকরিয়া থানার সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম ও চকরিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রাবেয়া খানমসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত (আসামি) করা হয়েছে।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে মামলা রেকর্ড করতে নির্দেশ দেন জেলা দায়রা ও জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত জজ মো.মামুনুর রশিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র দাশ।

আসামীরা হলেন- চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শফিকুল ইসলাম, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল মহিউদ্দিন, পুলিশ কনস্টেবল ইসরাক হোসেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম ও সহকারি শিক্ষক মো.জসীম উদ্দিন, সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামাল, অফিস সহায়ক মো.পারভেজ, নৈশ প্রহরী নুর মোহাম্মদসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫জন।

মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র দাশ বলেন, গত ২২ আগষ্ট চকরিয়া থানা হেফাজত থেকে দূর্জয় চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। পরে সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপায়ন দেবকে থানায় এসে তার সামনে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেন। পরে ২৬ আগষ্ট চকরিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ও চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯জনকে আসামী করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন নিহত দূর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী। কিন্তু এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করেনি থানা।

তিনি আরও বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা দায়রা ও জজ আদালতে মামলার বাদি কমল চৌধুরী ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫ ধারা আইনে একটি ফৌজদারি এজাহার দাযের করেন। পরবর্তীতে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো.মামুনুর রশিদ ১৪ সেপ্টেম্বর (রবিবার) শুনানির দিন ধার্য্য করেন। আদালতের বিচারক বাদি কমল চৌধুরী এবং মামলার আইনজীবিদের বক্তব্য শুনেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারক আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পুলিশ সুপার (এসপি) মো.সাইফউদ্দীন শাহীনকে নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে বাদির বাবা কমল চৌধুরী বলেন, গত ২১ আগষ্ট বিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে দুর্জয়কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। আসলে গত ১০-১২ দিন ধরে এই অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আবারও একই অভিযোগে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটি কক্ষে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

পরে শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে থানা হাজত খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কমল চৌধুরী আশংকা প্রকাশ করে বলেন, মামলায় ওসিসহ পুলিশের চার সদস্য আসামী থাকায় ভিসেরাসহ বিভিন্ন স্থরের চিকিৎসকের সঠিক প্রতিবেদন না-ও পেতে পারি।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাস বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার নথি পাওয়ার পরে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার ডকুমেন্টস পুলিশ সুপার স্যারের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।



banner close
banner close