জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ১৯ জন শিক্ষক ও ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল (মঙ্গলবার) পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর এই নোটিশ জারি করে। শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে।
প্রশাসনিক ও একাডেমিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিনটি কমিটি গঠন করে। এর মধ্যে রয়েছে— প্রশাসনিক অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত কমিটি, একাডেমিক অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত কমিটি এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঘটনার তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটি। এই কমিটিগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, এম. জাকির হোসেন খান ও অধ্যাপক আকতার হোসেন মজুমদার।
একাডেমিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শোকজপ্রাপ্ত ১৯ শিক্ষক হলেন—
ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ; থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুশফিকুর রহমান (হীরক মুশফিক), সহকারী অধ্যাপক নুসরাত শারমিন তানিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন; সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহিদুল কবীর ও ড. মুশাররাত শবনম; চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নগরবাসী বর্মণ (পার্থ) ও মাসুম হাওলাদার; দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তারিফুল ইসলাম ও প্রভাষক মো. খাইরুল ইসলাম; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মার্জিয়া আক্তার, ড. মো. সাহাবউদ্দিন ও ড. মো. মাহবুব হোসেন; হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা ও সহকারী অধ্যাপক অন্তরা মাহবুব; হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোল্লা আমিনুল ইসলাম; কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম আল মামুন; ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা খানম এবং ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তুহিনুর রহমান (তুহিন অবন্ত)।
প্রশাসনিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শোকজপ্রাপ্ত ২০ কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন—
সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, উপ প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল হালিম, পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী মাহবুব ইলাহী, প্রকৌশল দপ্তরের কেয়ারটেকার মো. আসাদুজ্জামান, পার্সোনাল অফিসার রেবেকা সুলতানা ও রোজিনা বেগম, হল সুপার সোহেল রানা, ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মমতাজ বেগম, উপ-রেজিস্ট্রার (স্টোর) নাজমুল হুদা, সহকারী প্রকৌশলী জান্নাতুন নাঈম, উপ-পরিচালক (শরীরচর্চা শিক্ষা দপ্তর) মো. ওমর ফারুক সরকার, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা, সহকারী পরিচালক (অর্থ) এস এম কাউসার আহমেদ, সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নির্মল চন্দ্র সাহা, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) রাধেশ্যাম, ডেমোনস্ট্রেটর মো. মশিউর রহমান, সিনিয়র প্লাম্বার মোহাম্মদ আসাবুল হক এবং পার্সোনাল অফিসার খালেদা জেসমিন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং প্রাথমিকভাবে তথ্য–প্রমাণ মিলেছে, তাঁদেরকে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কমিটিকেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন:








