যশোরের বহুল সমালোচিত সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের ছোট ভাই কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য করা হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্মসচিব) কাজী নজরুল ইসলাম গত ১১ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
বিগত আট মাস আগে ঘোষিত সাত সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে কোচ প্রতিনিধি শ্রী নিবাস হালদারকে সরিয়ে কাজী ইনামকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এই প্রজ্ঞাপন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, শুধু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
কাজী ইনাম আহমেদকে অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন যশোরের ক্রীড়া সংগঠকরা। তারা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত যশোরবাসীর জন্য হতাশাজনক ও অপমানজনক। সংগঠকরা অবিলম্বে কাজী ইনামকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এম এ আকসাদ সিদ্দিকী শৈবাল বলেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই সিদ্ধান্ত যশোরের ক্রীড়া অঙ্গনের জন্য দুঃখজনক। এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজী ইনাম তার ভাইয়ের ক্ষমতা ব্যবহার করে যশোরের ক্রীড়া অঙ্গন দখল করে রেখেছিলেন। তারা ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখেনি। সরকারের পতনের পর দখলদারদের হাত থেকে যশোর মুক্ত হয়েছিল, এখন আবার তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, এটা যশোরবাসী মানতে পারবে না।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক কোষাধ্যক্ষ সোহেল মাসুদ হাসান টিটো বলেন, ‘যশোরের ক্রীড়াঙ্গণকে ধ্বংস করার জন্য কাজী ইনামকে কমিটিতে আনা হয়েছে। অবিলম্বে তাকে বাদ দিতে হবে, নইলে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামবো।’
বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটার মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ‘এটা ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের অংশ। যাদের কারণে যশোরের ক্রীড়াঙ্গণ ধ্বংস হয়েছিলো, তাদের ফিরিয়ে আনা খুবই অন্যায়। আমরা ঘৃণাভরে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।’
এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। কীভাবে বা কোন মাধ্যমে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেটিও আমি জানি না। আমাদের নির্বাহী কমিটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি পত্র দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেই বিষয়টি জেনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজী ইনাম যে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের ভাই, সেটি আমি জানি। তবে তার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত পরিচয় বা দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি।’
যশোরের ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, যশোরবাসী আর কোনো দখলদার পরিবারকে ক্রীড়াঙ্গণে দেখতে চায় না। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দ্রুত কাজী ইনামকে অ্যাডহক কমিটি থেকে বাদ না দিলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা হবে।
আরও পড়ুন:








