রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৭০ দিনে ৩৫১ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। চলতি বছরের গত জুলাই থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসা নেয়া এসব রোগীর মধ্যে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের।
তবে রামেক হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন- সর্বশেষ ১৪ বছরের মধ্যে ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি সাপে কাটা রোগী এসেছেন চিকিৎসা নিতে। তাই সাবধানতার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়াও আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, এ বছর জুলাই থেকে বুধবার পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ৩৫১ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১৩ জনকে কেটেছিল রাসেলস ভাইপার সাপ। ৮১ জনকে বিষধর সাপ ও ২৭০ জন রোগীকে নির্বিষ সাপে কেটেছিল। বাকি ৬৮ জন রোগীকে অন্যান্য বিষধর সাপে কেটেছিল।
সবশেষ গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার বাশার নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়। নিহত বাশারের চাচাতো ভাই আকাশ বলেন, রাতে পদ্মার ধারে ঘুরতে গিয়েছিলেন বাশার। সেখানেই তাকে সাপে কামড় দেয়। রাতেই তাকে হাসপাতালের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির দেড় ঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের আইসিইউ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে ৫৭ জন সাপে কামড়ানো রোগীকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেই হিসেবে মৃত্যুর হার ছিলো ২৪ শতাংশ। অথচ চলতি বছরে গত সোমবার পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮৩ জন। রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও তবে মৃত্যুর হার কিছুটা কম। এবার ১৪ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ বছর রাসেল ভাইপার সাপে কামড়ানো সাতজন রোগী আইসিইউতে ভর্তি হলেও তাদের ছয়জনেরই মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে ঘরে কামড়ানো কমন ক্রেইটস বা কালাচ সাপের বিষক্রিয়ার জন্য ৭৬ জন রোগীর ৭১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘গত ১৪ বছরে হাসপাতালে এত সাপে কাটা রোগী আসেনি। তবে যেসব রোগীর মৃত্যু হয়েছে তারা অনেক দেরিতে হাসপাতালে পৌঁছেছিল। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসা পেতে দেরি হওয়ার কারণে তাদের আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সচেতনতা নিঃসন্দেহে বেড়েছে। তবু একটি সাপে কামড়ানো রোগীও মারা যাবে না, এটা সবার মতো আমারও কামনা।’
আরও পড়ুন:








