মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

স্কুল না করেও বেতন নিচ্ছেন মাসের পর মাস, শিক্ষক ব্যস্ত অবৈধ বালু ব্যবসা ও রাজনীতিতে

মোহাম্মদ ইলিয়াছ, বান্দরবান

প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৬:৩৭

আপডেট: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৬:৩৮

শেয়ার

স্কুল না করেও বেতন নিচ্ছেন মাসের পর মাস, শিক্ষক ব্যস্ত অবৈধ বালু ব্যবসা ও রাজনীতিতে
আরিফুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মেনক্য মেনকক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, বেতন উত্তোলন, অবৈধ বালু ব্যবসা এবং জামাত-শিবিরের নাম ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষক আরিফুল্লাহ মাসে একবার বা দুইবার স্কুলে এসে শুধুমাত্র হাজিরা বেতন খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। বাকি সময় তিনি অবস্থান করেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় নিজ এলাকায়, যেখানে তিনি অবৈধ বালুর ব্যবসা রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িত বলে জানা গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তমাস ত্রিপুরা বলেন, "এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।"

অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, ২০১৭ সালে যোগদানের পর থেকেই আরিফুল্লাহ নিয়মিত স্কুলে আসেন না। তার বিরুদ্ধে আগত শিক্ষা কর্মকর্তাদেরম্যানেজকরারও অভিযোগ রয়েছে।

আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি এলাকায় জামাত-শিবিরের নেতা পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটান এবং অবৈধ বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন। কিছুদিন আগে বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে বালুর মহাল দখল করতে গিয়ে মারামারির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয় লামা থানায়।

এছাড়াও সেপ্টেম্বর লামার আজিজনগর ইউনিয়নে যুবদল নেতাকে অপহরণ নির্যাতনের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের হয় লোহাগাড়া থানায়। পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পলাতক রয়েছেন।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক আরিফুল্লাহ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে আমি স্কুলে গিয়েছিলাম। গত সপ্তাহে যেতে পারিনি কারণ আমি ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম। কেউ আমার ক্ষতি করার জন্য ভুল তথ্য দিচ্ছে।

বান্দরবানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, “বিষয়টি এখনো আমার জানা ছিল না। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসীর দাবি, একজন সরকারি চাকরিজীবী যদি নিয়মিত কর্মস্থলে না গিয়ে অন্যত্র অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকেন, তা রাষ্ট্র শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি চরম অবজ্ঞা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ চায় তারা।



banner close
banner close