কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলারধীন মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের, শ্রমিককে মারধর, ড্রেজার ও বাল্কহেড আটক করে চাঁদা দাবি অভিযোগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহান্মদ ছড়া র অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বালু উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানের ইজারাদার এই অভিযোগ করেন।
শনিবার দুপুরে, ভৈরব প্রেস ক্লাবে,জেলার অর্ধশতাধিক গণমাধ্যম কর্মীর উপস্হিতিতে, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করেন, বালু উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাগিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও ইজারাদার তানভীর আহমেদ।
সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার রাজস্ব শাখার, ১৪ মে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, তাং- ৩১,১২,৪৮০০,০০,৭,৩৩,০০৮,২৩-১০৮৫ নং স্মারক মূলে মেঘনা নদীর ১৬১০.২৫৮ একর নদীর শ্রেণী ভূমি বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য ১৬ কোটি ৯৪ লক্ষ সাইএিশ মূল্য পরিশোধ করে ৩৭ হাজার ৫শ টাকা মূল্য পরিশোধ করে বৈধভাবে ইজারাদার হই। এবং বালু উত্তোলনের জন্য প্রশাসন কর্তৃক সীমানা দখল বুঝে নিয়ে ইজারার শর্ত অনুসরণ করে অনুমোদিত এলাকায় বালু উত্তোলন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাইতেছি।
গত ২/৯/২০২৫ ইং তারিখে, ভোর আনুমানিক ৬টায়, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া আকস্মিক আমার বৈধ বালু উত্তোলনের সীমানায় ঢুকে, ৪টি ড্রেজার ৫টি বাল্কহেড জব্দ করে, পাশাপাশি বালুর নৌকায় থাকা ২জন শ্রমিককে আটক করে ১ বছর করে সাজা দেয়। এবং আরো ২/৩ জন শ্রমিককে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেহরক্ষী হিসেবে থাকা আনসার বাহিনীর সদস্যরা মারধর করে। উক্ত শ্রমিকদের নিকট একটি ব্যাগ থেকে বালু উত্তোলনের দুই দিনের জমাকৃত ১১ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।।
এই পর্যন্ত আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন মালিকের ১৪টি ড্রেজার ও ১টি বাল্কহেড, জব্দ করে রাখে।
সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার আরো জানান, বর্তমানে তার ড্রেজার বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি, পাশাপাশি সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা একটি সঙ্ঘবদ্ধ মহলের সাথে যুগসাজেসে, আমার বৈধ ইজারার টাকা থেকে প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা করে দিতে হবে প্রস্তাব করে, আমি তার এই প্রস্তাবে রাজি না হলে, পরবর্তীতে সীমানা লঙ্ঘনের মিথ্যা অভিযোগে আমার ব্যবসায়িক ৪ সহকর্মী এবং অন্য ৩ জন সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আশুগঞ্জ থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।,
ইজারাদার বলেন, মঙ্গলবার ঘটনার সময় আমাদের কোন লোক ইউএনও কে প্রাণনাশের হুমকি বা অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ অসত্য ও মিথ্যা বানোয়াট।
আমি উপজেলা প্রশাসনের নিয়ম মেনে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
ইজারাদার তানভীর আহমেদ অভিযোগ করেন, প্রতিদিন আশুগঞ্জের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে, মীর আক্তার এন্ড কো. নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ও বানোয়াট কাগজের মাধ্যমে একটি অসাধূ মহল ১৮ টি ড্রেজার দিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করছে,
উল্লেখ্য উক্ত মীর আক্তার অ্যান্ড কো. কে তিন মাসের জন্য বালু উত্তোলন না করিতে হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দেয়।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে একটি অসাধু চক্রের সাথে মিলে সঙ্ঘবদ্ধ ওই দলকে বালু উত্তোলন করিতে সহায়তা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত, এক ব্যবসায়ী হানিফ মাহমুদ বলেন,
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী, তিনি অতি দ্রুত সরানোর জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের ব্যবসায়ীদের মাঝে, আরো যারা উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজদের সভাপতি জাহিদুল হক, ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া, আরএ মারুফী, জিল্লুর রহমান সহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
পরে সাংবাদিকদের হাতে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত কপি তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পরে, সাংবাদিকরা সরজমিনে নদীতে গেলে, প্রায় ২০টি মাটি কাটার ড্রেজার, ও বালু বাহী নৌকা দেখতে পায়, সাংবাদিকদের নৌকা দেখতে পেয়ে, ড্রেজার গুলি দিক-বেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনের তানভীর আহমেদ জানান, আজ শনিবার কোর্ট বন্ধ থাকায়, আগামীকাল রবিবার কিশোরগঞ্জ আদালতের আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রাফে মোহাম্মদ ছড়া বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে অভিযোগ দাখিল করা হবে।
আরও পড়ুন:








