খুলনার ১১৩ বছরের পুরোনো জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি থাকায় চরম নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে বন্দিরা দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্কে। তবে রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের খালাশীর মোড় এলাকায় প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন আধুনিক নতুন কারাগারের কথা কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে।
১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত খুলনা জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৬৭৮ জন হলেও বর্তমানে সেখানে বন্দি রয়েছেন প্রায় ১,৩৭৮ জন। ফলে প্রতিনিয়তই বাড়ছে চাপ, কমছে মানবিক পরিবেশ। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ পরিস্থিতি বন্দিদের জন্য যেমন, তেমনি নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
নতুন কারাগারটি নির্মাণের মাধ্যমে বন্দিদের জন্য একটি নিরাপদ, আধুনিক ও সংশোধনাগার-ভিত্তিক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সেখানে ৪,০০০ বন্দির ধারণক্ষমতা থাকবে, যদিও প্রাথমিকভাবে ২,০০০ বন্দির জন্য অবকাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে।
গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম জানান, কারাগারে থাকবে পৃথক ব্যারাক, ফাঁসির মঞ্চ, নারী ও কিশোর বন্দিদের জন্য আলাদা ভবন, ৫০ শয্যার হাসপাতাল, স্কুল, ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র, রান্নাঘর, কারারক্ষীদের কোয়ার্টার ও ডে-কেয়ার সেন্টার। শিশুসন্তানসহ নারী বন্দিদের জন্য থাকবে আলাদা ওয়ার্ড ও খেলাধুলার ব্যবস্থা।
২০০৮ সালে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হলেও ২০১১ সালে একনেকে অনুমোদন পায়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ১৪৪ কোটি টাকা, যা পরবর্তীতে সংশোধন হয়ে দাঁড়ায় ২৫১ কোটি টাকায়। আটবার সময় বাড়ানো হলেও এখনো পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। মাটি ভরাটসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনও বাকি।
জুলাইয়ে কারাগারটি হস্তান্তরের কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়েও কাজ শেষ না হওয়ায় খুলনা জেলা কারাগারের সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান ও জেলার মো. মুনীর হুসাইন অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত কাজ শেষ না হলে নতুন কারাগার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয়। এতে বন্দিদের দীর্ঘদিন ধরে চলা মানবিক সংকটেরও অবসান হবে না।
আরও পড়ুন:








