ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছে শরিয়তপুর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী এবং সরকারি কৌঁসুলিদের বিরুদ্ধে! এমনকি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকার আদালতে হওয়া হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আসামিদেরও অন্য মামলায় জামিন করানো হচ্ছে জেলা জজ আদালতে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়েও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় সশস্ত্র হামলা চালানো আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে করা এসব মামলা থেকে তাদের রক্ষা করতে আইন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিএনপি প্যানেলের একদল আইনজীবী প্রকাশ্যে লড়ছেন আদালতে—মিলেছে এমন অভিযোগও।
গেলো দেড় যুগ ধরে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পদে থাকা নেতাকর্মীদের মামলা থেকে রক্ষা করতে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের প্যাডে নাম বসিয়ে তাদের বিএনপি নেতা হিসেবে আদালতে উপস্থাপনেরও অভিযোগ উঠেছে।
হৃদয় হাওলাদার নামে হাসিনার সাথে জুলাই হত্যাকাণ্ডে একই মামলার আসামিকেও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বানিয়ে জামিন দেয়ার অভিযোগ করেছেন শরিয়তপুর জেলা জজ আদালতের এই আইনজীবী।
দীর্ঘদিন মামলা-নির্যাতনের শিকার বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত ভুক্তভোগীরা ২৪-এর অভ্যুত্থানের পরও হামলায় আহত হয়ে পাচ্ছেন না বিচার। তাদের অভিযোগ, হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পক্ষেই আদালতে লড়ছেন বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা। একই অভিযোগ অন্য মামলার বাদীদেরও।
এ অবস্থায়, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্তদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ালে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিচার ব্যবস্থা প্রভাবিত হয় বলে মন্তব্য আইনজ্ঞদের। এছাড়াও, এসব ঘটনার মাধ্যমে সরকারি কৌঁসুলীরা নানা প্রকার অপরাধের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার পক্ষে জামিন চেয়ে আদালতে দাঁড়ানো অতিরিক্ত পিপি এবং শরিয়তপুর জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব, যুবদল নেতা মৃধা নজরুল কবিরের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, যে কারও পক্ষেই দাঁড়াতে পারেন তিনি।
তবে, সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন আইনি বাধা না থাকলেও বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের এসব কর্মকাণ্ডের ফলে গণহত্যাকারী দলের নেতাকর্মীরা পুনর্বাসিত হচ্ছে।
কেবল শরিয়তপুর নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের আওয়ামী লীগের চিহ্নিত অপরাধীদের পক্ষে আইনি লড়াই করার খবর মিলছে। জামিনে বের হয়ে কোন কোন জেলার নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতারা চেষ্টা করছে আধিপত্য বিস্তারের।
২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ঝটিকা মিছিলের প্রবণতা। বাড়ছে অনলাইন-অফলাইনে তাদের নানা তৎপরতা। এসব ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে গণহত্যায় অভিযুক্ত আসামিদের জামিনে বের হওয়াকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা। আর এদের মদদদাতারাও সমানভাবে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হবেন বলছেন জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতারা!
ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=n74PYKfJ0hQ
আরও পড়ুন:








