মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০ পৌষ, ১৪৩২

ছেলেকে বাঁচাতে কিডনি দেবেন মা, অর্থাভাবে থমকে আছে অস্ত্রোপচার

মো. নাঈম ইসলাম, শেরপুর

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:১৯

আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:৩০

শেয়ার

ছেলেকে বাঁচাতে কিডনি দেবেন মা, অর্থাভাবে থমকে আছে অস্ত্রোপচার
কিডনি রোগে আক্রান্ত কনি মিয়া ও তার মা মনোয়ারা বেগম।

শেরপুর জেলা শহরের চকপাঠক মহল্লার দিনমজুর আশরাফ আলী ও মনোয়ারা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে কনি মিয়া (২২)। দুরারোগ্য কিডনি রোগে আক্রান্ত এই তরুণের দুটি কিডনিই পুরোপুরি বিকল হয়ে গেছে। ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিতে প্রস্তুত গর্ভধারিণী মা মনোয়ারা বেগম। কিন্তু প্রতিস্থাপন ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে থমকে আছে অস্ত্রোপচার।

বর্তমানে রাজধানীর সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কনি মিয়া। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খুব দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন না করলে তার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

সহায়তা না পেলে অনিবার্য মৃত্যুর আশঙ্কা:

কনি মিয়ার পরিবার বর্তমানে মামার বাড়িতে আশ্রিত। পরিবারের প্রধান আশরাফ আলী নিজেও একজন হৃদরোগী। বাড়িতে নেই কোনো জমি-জমা বা বিক্রির মতো সম্পদ। দিনমজুরের আয়েই কোনোমতে চলছিল সংসার। এখন চিকিৎসা খরচ চালাতে গিয়ে পরিবারটি প্রায় নিঃস্ব।

কনির মামা, অটোরিকশাচালক মানিক মিয়া বলেন, "দুই বছর আগে হঠাৎ কনির চোখে সমস্যা দেখা দেয়। পরে চিকিৎসক জানান, কিডনির জটিলতায় এ সমস্যা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সঞ্চয়টুকুও শেষ হয়ে গেছে। এখন প্রতিসপ্তাহে ডায়ালাইসিস করাতে হয়, এতে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ সাহায্য করছেন, কিন্তু প্রতিস্থাপন ছাড়া বাঁচার আর কোনো পথ নেই।"

কনি মিয়ার মা মনোয়ারা বেগম বলেন,"নিজের একটা কিডনি দিতে আমি প্রস্তুত। কিন্তু চিকিৎসা আর অস্ত্রোপচারের জন্য অন্তত ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমার তো কিছুই নেই ছেলেকে চোখের সামনে এভাবে মরতে দেখে সহ্য করতে পারছি না। সবার কাছে অনুরোধ, আমার সোনার ছেলেটাকে বাঁচাতে পাশে দাঁড়ান।”

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আজকের তারণ্য’-এর সভাপতি রবিউল ইসলাম রতন বলেন, "চিকিৎসকরা কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। কনির মা নিজেই কিডনি দিতে রাজি, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতা এখন সবচেয়ে বড় বাধা। আমরা সমাজের বিত্তবানদের কাছে কনির পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাই।"

শেরপুর গ্র্যাজুয়েট ক্লাবের সভাপতি আল আমিন রাজু বলেন, "ছেলেটি খুবই অসুস্থ। তার জন্য জরুরি কিডনি প্রতিস্থাপন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে ১০ লাখ টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং সংগঠনের পক্ষ থেকেও সহায়তা করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি সমাজের সামর্থ্যবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।"

শেরপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আরিফ হোসেন জানান,“কিডনি, ক্যান্সারসহ ৬টি জটিল রোগের চিকিৎসায় সরকারিভাবে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হয়। তারা আবেদন করলে যাচাই-বাছাই শেষে এই অনুদান দেওয়া যেতে পারে।”

সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ

অর্থ সহায়তা পাঠাতে ও বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন: ০১৯৭৯-৬৫০২৭৫ (কনির পরিবারের নম্বর)



আরও পড়ুন:

banner close
banner close