ছবি: বাংলা এডিশন
ফেনীর সোনাগাজীতে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং সরকারি জমি দখল করে মাছের প্রকল্প তৈরির অভিযোগে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় ৭০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমিরাবাদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বুধবার রাত ১০টার দিকে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—আমিরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মহিউদ্দিন মহিম, মিরসরাই বিএনপি নেতা শেখ ফরিদ মেম্বার, জেলা ছাত্রদলের সদস্য শরিফুল ইসলাম রানা মুন্সি এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মাসুদ। অন্যান্য আসামিরা হলেন—নুর আলম, নিজাম উদ্দিন, আজিজ মেম্বার, শাহজাহান সাজু, হক সাহাব, ছাত্রদল নেতা নুর আলম শামীম, মাসুদ, যুবদল নেতা ও নিজাম হাজারীর ভাগিনা হায়দার আলী মাসুদ ভূঁঞা, রিপন, রাজু, মিলন ভূঁঞা এবং উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আব্দুল আউয়াল সজীব।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামিরা দুটি ভিন্ন স্থানে বেআইনি কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। প্রথমত, গত ১৪ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নবাবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও মোবারকঘোনা এলাকায় বড় ফেনী নদীর পাড় থেকে ড্রেজিং মেশিন ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করা হয়। একইসঙ্গে সরকারি জমি দখল করে সেখানে মাছের প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে, যা নদীর তীর ভাঙনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে এবং নিকটবর্তী বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, দ্বিতীয় আরেকটি ঘটনায় গত ৯ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকার কলমির চর থেকে অন্য একদল আসামি ভেকু মেশিন ব্যবহার করে সরকারি জমির মাটি কেটেছে। তারা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে মাছের প্রকল্প তৈরি করেছে, যা আইনত দণ্ডনীয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয় যে, অভিযুক্তদের এই কার্যকলাপ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ (সংশোধনী ২০২৩), ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এজাহারে আরও বলা হয়, স্থানীয় প্রশাসন এর আগেও একাধিকবার যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছিল, কিন্তু আসামিরা সেই অভিযান উপেক্ষা করে পুনরায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও সরকারি জমি দখলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন বলেন, "এ ঘটনায় বুধবার থানায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
আরও পড়ুন:
