মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান মোল্লার বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগে গেজেট বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকাবাসী। অভিযুক্ত ওই মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার চালা ইউনিয়নের হাসমিলান গ্রামের ইকরাম উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
২ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, বিগত চার মাস আগে হাসমিলান গ্রামের আমেরদ্দিন মোল্লার ছেলে খোরশেদ আলম মোল্লা বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান মোল্লার বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার দাবিতে গেজেট বাতিলের জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেই লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৬ আগস্ট দুই পক্ষকে তলব করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। তারই ধারাবাহিকতায় আব্দুল মান্নান মোল্লার গেজেট বাতিলের দাবিততে এলাকাবাসী আয়োজনে মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে উপজেলার গোয়ালবাগ গ্রামের বাসিন্দা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, চালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান মোল্লা আমাদের সাথে কখনো মুক্তিযুদ্ধ করেননি। আওয়ামী শাসনামলে ২০২২ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের গেজেট ভুক্ত হন। ওই সময় যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাদের ম্যানেজ করে তিনি এই মুক্তিযুদ্ধের সনদ নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আমাদের সাথে কখনো যুদ্ধ করেননি এবং কোনো মুক্তিযোদ্ধাও তিনি ছিলেন না। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার গেজেট প্রত্যাহারের দাবি করছি।
উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের বাসিন্দা বয়ড়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, আব্দুল মান্নান মোল্লা কখনও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমরা কেউ তার সাক্ষীও দেইনি। তাহলে উনি সাক্ষী পেল কোথায় আমরা জানিনা। আমরা চাই তদন্ত করে তার সনদ বাতিল করার জোর দাবি করছি।
দিয়াবাড়ি এলাকার জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. সাইদুল ইসলাম জানান, আমাদের জানামতে সে কোনো দিনই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। বরং সে মুক্তিযোদ্ধার ক্ষমতায় এলাকার অনেক মানুষকে বিভিন্নভাবে মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। মূলত সে হচ্ছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এলাকার একটা লোকও বলতে পারবে না। সে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে এলাকায় নিরীহ লোকজনকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। আওয়ামী শাসনামলের ২০২২ সালে টাকা পয়সা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গেজেট লাভ করে। আমাদের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটাই দাবি, এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল সহ এ পর্যন্ত তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাবদ সরকারি কোষাগারের যে অর্থ ভোগ করেছেন, তা যেন সরকারী কোষাগারে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, জমি জমা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীর সনদসহ তৎকালীন যুদ্ধকালীন সময়ের ঢাকা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কমান্ডার ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরীরও সনদ আছে বলে তিনি দাবি করেন।
আরও পড়ুন:








