বর্ষা মৌসুম এলেই ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েন ভোলার মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন কলাতলি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। চারদিক ঘিরে উত্তাল মেঘনা নদী থাকলেও আজও এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো বেড়িবাঁধ। ফলে প্রতি বছরই জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় বসতঘর, বাজার, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও বিভিন্ন স্থাপনা।জোয়ারের পানিতে প্লাবিত জনপদ সরেজমিনে জানা গেছে, কলাতলির আবাসন বাজার, মনির বাজার, কবির বাজার, রিপন বাজার, গোলের খাল বাজার ও হিন্দু আবাসন বাজারসহ পুরো ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে। বসতবাড়ি ও বাজার প্লাবিত হয়ে মানুষের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হয়। বিশুদ্ধ পানির জন্য দেখা দেয় তীব্র সংকট। অসহায় মানুষের হাহাকার
স্থানীয় গৃহবধূ লুতফা বেগম ও সালমা বেগম বলেন, ‘প্রতিবারই জোয়ারের পানিতে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যায়। ছোট বাচ্চাদের খাটের ওপরে তুলে রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।’
মনির বাজারের ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন জানান, ‘প্রতিবছরই দোকানপাটে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়। অনেক ব্যবসায়ী লোকসানে পড়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।’
কৃষক মো. আব্দুল কালাম বলেন, ‘কলাতলির জমি চাষের জন্য উপযোগী হলেও প্রতি বছর জোয়ারের পানিতে ফসল ভেসে যায়। লোকসান দিতে দিতে অনেকে কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়েছে।’
প্রশাসনের উদ্যোগ মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে রাব্বি জানান, কলাতলি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা জানান, কলাতলি, তজুমদ্দিনের চর জহির উদ্দিন ও চর মোজাম্মেল এলাকায় স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রায় ৭১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হলে এ অঞ্চলের চিত্রই বদলে যাবে। আশার আলো
স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে আর জোয়ারের পানির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে না। বেড়িবাঁধ নির্মাণ হলে শুধু দুর্ভোগই কমবে না, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন সম্ভাবনাও প্রসারিত হবে।
আরও পড়ুন:








